অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
অতীতের মতো জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনা নিয়েও দোষারোপের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। অতীতে খুনি বা হামলাকারীরা ধরাছোয়ার বাইরে থাকলেও এবার হামলাকারী ধরা পড়েছে। এমনকি হামলাকারী ফয়জুরের মামা ও সুনামগঞ্জ জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুর রহমানকেও ফয়জুরদের তালাবদ্ধ ঘর থেকে আটক করেছে র্যাব। এ হামলার পেছনে কার হাত থাকতে পারে এসব বের করা এখন খুবই সহজ বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
কিন্তু, এনিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের দেয়া বক্তব্যে জনমনে নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ‘হামলাকারীদেরকে বিএনপি পৃষ্টপোষকতা করছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া এমন বক্তব্যে মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আর মানুষের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার কিছু কারণও আছে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জাফর ইকবালের ওপর হামলার পরই সিলেট শহরের শেখের পাড়ায় হামলাকারী ফয়জুরের পরিবার বাসার বাইরে দিয়ে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। এরপর রাত ১২ টার দিকে র্যাব গিয়ে দরজার তালা ভেঙ্গে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালিয়ে তালাবদ্ধ ঘর থেকে ফয়জুরের মামা ও সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুর রহমানকে আটক করে নিয়ে আসে।
আজ রোববার র্যাব-৯ এর কমান্ডার অফিসার কর্নেল আলী হায়দার সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনায় আটক ৩ জনের মধ্যে ফয়জুরের চাচা আব্দুর কাহার ও তার পূর্ব কর্মস্থলের মালিকের পরিচয় প্রকাশ করেছে। কিন্তু, আটক তৃতীয় ব্যক্তি ফয়জুরের মামা ও কৃষকলীগ নেতা ফজলুর রহমানের পরিচয় প্রকাশ করেনি র্যাব।
এ নিয়ে এখন পুরো সিলেট জুড়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। মানুষের মনে নান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফয়জুরের বাবা-মা পালিয়ে গেলেও কৃষকলীগ নেতার তালাবদ্ধ ঘরে অবস্থানের রহস্য কী? সাধারণ মানুষও বলাবলি করছে, ক্ষমতাসীন দলের এ নেতার পরিচয় লুকাচ্ছে কেন র্যাব? ওপরের নির্দেশেই কি তার পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে?
আবার অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কৃষকলীগের এই নেতাকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। যার কারণে হামলাকারী ফয়জুর সরকারদলীয় নেতার ভাগিনা হওয়ার পরও ওবায়দুল কাদের এর দায়ভার বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন।
তারপর অতীতেও দেখা গেছে, কোনো হামলার ঘটনা ঘটলেই প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারদলীয় নেতারা তদন্তের আগেই ঢালাওভাবে বিএনপি-জামায়াতের ওপর দোষ চাপিয়েছে। পরে দেখা গেছে হামলাকারীদের অনেকেই আওয়ামীগ নেতাদের সন্তান ও আত্মীয় স্বজন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জঙ্গি নেতা শাইখ আব্দুর রহমান ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আযমের ভগ্নিপতি। এরপর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলাকারীদের অন্যতম ছিল আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে। এছাড়া কল্যাণপুরের জঙ্গি হামলার সঙ্গেও চট্টগ্রামের এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে জড়িত ছিল।
সাধারণ মানুষ মনে করে, দেশের পরিস্থিতিকে ভিন্ন দিকে সরকারই পরিকল্পিতভাবে নিজেদের লোক দিয়ে জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। দায় এড়াতে এখন এ হামলার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতকে জড়ানোর চেষ্টা করছে।