যশোর শহরের অভিজাত হোটেল সিটি প্লাজা থেকে নারী পুলিশসহ আটক হয়েছেন যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্যর ছেলে শুভ। শুভর সঙ্গে আটক হয়েছেন মণিরামপুর থানার এএসআই সাবরিনা সুলতানা। হোটেল কর্তৃপক্ষ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
শুভর মা তন্দ্রা ভট্টাচার্য বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে শুভর বাবা স্বপন ভট্টাচায্য যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ সোমবার দুপুরের পর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) শামসুদ্দোহা শহরের হাটখোলা রোডের হোটেল সিটি প্লাজায় অভিযান চালান।
এসময় হোটেলের একটি কক্ষ থেকে ঘনিষ্ঠ ভাবে মেলামেশার সময় শুভ ও সাবরিন নামের দুই যুবক-যুবতীকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। সিটি প্লাজার ম্যানেজার শেখ সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল দুপুর ১টার দিকে শুভ তার গেস্ট আছে বলে হোটেলের ৪র্থ তলায় একটি কক্ষ বুকিং দেন। শুভ এমপি পূত্র এবং অতি পরিচিত হওয়ায় মহিলা গেস্টসহ রুম বুকিং নিতে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী বেলা দেড়টার দিকে হোটেল কক্ষে নারী থাকার বিষয়টি থানায় অবহিত করা হয়। এরপর থানার ওসি অপারেশন শামসুদ্দোহা কক্ষটিতে অভিযান চালিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় শুভ ও সাবরিনকে আটক করেন।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওসি অপারেশন শামসুদ্দোহা হোটেল থেকে কাউকে আটকের কথা স্বীকার করেননি। যদিও অভিযানে অংশ নেয়া একাধিক পুলিশ কনস্টেবল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এই ঘটনার পর পরই মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকাররম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এএসআই সাবরিনা তার থানায় কর্মরত। তিনি বলেন, এএসআই সাবরিন পাসপোর্ট করার জন্য দুপুর ১২টার সময় সিসি নিয়ে যশোর যান। তবে সেখানে কী হয়েছে তা জানা নেই। এখনো পর্যন্ত এএসআই সাবরিনা থানায় ফেরেননি বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহ উদ্দিন সিকদার বলেন, একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা অফিস অর্ডার ছাড়া হোটেলে গিয়েছিলেন। কী কারণে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন তা খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। তবে এমপির ছেলে শুভকে আটক করা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই বলে দাবি করেন এডিশনাল এসপি।
অপরদিকে, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্যের স্ত্রী যশোর মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য বলেন, তার ছেলে শুভ দুপুরের দিকে কয়েক যুবককে নিয়ে হোটেল সিটি প্লাজায় যান। তিনি শুভকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার জন্য হোটেল কর্মীদের দায়ী করেন। সন্ধ্যায় তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য সংবাদকর্মীদের জানান, আমার ছেলে শুভ বাড়িতেই আছে। তবে ওই নারী পুলিশ সদস্য ডিবি পুলিশ হেফাজতে আছে।
উল্লেখ্য, এর আগে এএসআই সাবরিনা সুলতানা বেনাপোল পোর্ট থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় অসামাজিক কার্যকলাপের সময় দুই বার হাতে নাতে ধরা পড়েন। সে সময় ফলাও করে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তাকে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
সূত্র: শীর্ষনিউজ