অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে যেসব গুম-অপহরণের ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে আলোচিত একটি গুমের ঘটনা হলো যুদ্ধাপরাধের বিতর্কিত অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের গুমের ঘটনা। এ ঘটনা পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এনিয়ে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে। বিশেষ করে লন্ডনে প্রতিনিয়ত আরমানের সন্ধানের দাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ লন্ডনের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একাধিকবার বিবৃতিও দিয়েছে আরমানের বিষয়ে। কিন্তু, এত বড় আলোচিত একটি ঘটনার কথা জানেন না ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী। এমনকি ব্যারিস্টার আরমানকে চিনেনও না বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ চ্যানেল৪ কে।
সম্প্রতি ইরানে আটক লন্ডনের নাগরিক নাজানিন আক্তারের মুক্তির জন্য ক্যাম্পেইন করছিলেন টিউলিপ। এসময় চ্যানেল৪‘র সাংবাদিক ডেইজি তাকে বাংলাদেশে গুম হওয়া জামায়াত নেতার ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করতে পারেন কি না এমন প্রশ্ন করতেই টিউলিপ জানান বাংলাদেশের এ ঘটনা সম্পর্কে তার জানা নেই। এরপর সাংবাদিক ডেইজি ইসলামিক দলের শব্দটি উচ্চারণ করতেই টিউলিপ বললেন মাইকেল জেকশন?
তারপর সাংবাদিক ডেইজি আরমানের নাম উচ্চারণ করার পর টিউলিপ বললেন, আমি ব্রিটিশ এমপি। আমার জন্ম লন্ডনে। বাংলাদেশের এ ঘটনা জানি না। এমনকি ওই সাংবাদিকের ওপর তিনি চটে গিয়ে সতর্কতার সঙ্গে প্রশ্ন করার জন্যও বলেন তাকে।
এদিকে, ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেইজি ও টিউলিপ সিদ্দিকীর এই কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এনিয়ে সমালোচনা ঝড় উঠে।
বিশিষ্টজনসহ সচেতন মানুষ বলছেন, টিউলিপ সিদ্দিকী লন্ডনে মানবাধিকারের কথা বললেও তার খালা শেখ হাসিনার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তিনি চুপ। ব্যারিস্টার আরমানের গুমের ঘটনা তিনি জানেন না তার এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না। কারণ, তার চোখের সামনেই প্রতিনিয়ত আরমানের সন্ধান দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন হচ্ছে। লন্ডন ভিত্তিক কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বিবৃতি-বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া লন্ডনের হাউজ অব কমন্সে এনিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। এমনকি আরমানের পরিবারের পক্ষ থেকে তার কাছে সহযোগীতা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এরপরও একজন এমপি হয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী বলছেন তিনি ব্যারিস্টার আরমানের গুমের বিষয়টি তিনি জানেন না, এটা সবার কাছেই হাস্যকর এবং এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল বলে মনে হয়েছে।
অনেকে বলছেন, টিউলিপ সিদ্দিকীর খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলায় উনি ক্ষেপে গিয়েছেন। যার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিককে সতর্কভাবে প্রশ্ন করার উপদেশ দিয়েছেন। এমনটি করার মাধ্যমে তিনি মূলত তার খালার গুম খুনকেই সমর্থন ও স্বীকৃতি দিয়েছেন।
আরো পড়ুন: ‘আমি বাংলাদেশি কেউ না’: গুম নিয়ে প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ
Discussion about this post