অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ তার নেতাকর্মীদেরকে আইন হাতে তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা সন্ত্রাস করার নির্দেশ দেয়ায় তাকে হুকুমের আসামি করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিবির সভাপতি মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত।
রোববার রাজধানীতে শিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের উদ্যোগে ১৫ আগস্ট ‘ইসলামী শিক্ষা দিবস’ ও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে মেধাবী ছাত্রদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন।
শিবির সভাপতি বলেন, সম্প্রতি ছাত্রলীগ সভাপতি তার নেতাকর্মীদের আইন হাতে তুলে নিয়ে হামলা সন্ত্রাস করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই দায়িত্বহীন নির্দেশের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরপরাধ ছাত্রদের হামলা নির্যাতন ও তাণ্ডব চালাচ্ছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন ক্যাম্পাস রক্তাক্ত করা হচ্ছে। এসবের দায় অবশ্যই ছাত্রলীগ সভাপতিকে বহন করতে হবে। সময়ের ব্যবধানে তাকে হুকুমের আসামি হয়ে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
শিবির সভাপতি আরো বলেন, বাংলাদেশের মৌলিক সমস্যা হলো শিক্ষাব্যবস্থায় সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া ও কাঠামোর অভাব। যে কারণে যৌন নির্যাতন, শিক্ষক লাঞ্ছনা, ছাত্র হত্যা, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিতে ছেয়ে গেছে দেশ। শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা-সংষ্কৃতি, ধর্মীয় চেতনা ও আদর্শের প্রতিফলন না থাকলে সে শিক্ষা মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে না। তিনি বলেন, কিছু ছাত্রসংগঠন গঠনমূলক ভূমিকা পালন না করে নীতি নৈতিকতা হারিয়ে, ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে পেশি শক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষ দমন করছে।
গত ৮ আগস্ট মঙ্গলবার কবি নজরুল কলেজের এক আলোচনা সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ বলেছিলেন, ‘যেখানেই ছাত্রশিবির পাওয়া যাবে সেখানেই ধোলাই দেওয়া হবে। শিবিরের প্রশ্নে প্রয়োজনে আইন হাতে তুলে নিতে হবে।’
ছাত্রলীগ সভাপতির এমন নির্দেশের পর সেদিন রাতেই শিবির সন্দেহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন সাধারণ শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন করে তাদের পায়ে গুলি করে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সন্দেহে কয়েকজন সাধারণ ছাত্রকে মারধর করে। তখন এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়ে কুবি প্রক্টর সাংবাদিককে ‘থাপড়াবেন’ বলে হুমকী দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সন্দেহে নিজেদের কর্মীকেই পেটায় ছাত্রলীগ। এভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানেই ছাত্রলীগ সভাপতির নির্দেশের প্রতিফলন দেখা যায়। তবে শিবির নাম দিয়ে মারধর করলেও নির্যাতনের শিকার বেশিরভাগই সাধারণ ছাত্র বলে জানা গেছে।
Discussion about this post