সরকার জামায়াতের সঙ্গে গোপনে নতুন করে সম্পর্ক করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, সরকার একদিকে বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার কথা বলছে, জামায়াতের বিরুদ্ধে বলছে। অন্যদিকে গোপনে জামায়াতের সঙ্গে নতুন করে আত্মীয়তা করার জন্য জোরেশোরে চেষ্টা করছে।
সরকার জামায়াতকে বলছে, তোমরা বিএনপির সঙ্গে থাকবে কেন, আমরা আছি না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিএনপি নেতার দাবি, জামায়াত জিয়াউর রহমানের সময়ে নয়, বরং ১৯৮৪ সালে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। বিএনপি বর্জন করলেও এরশাদের শাসন আমলে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেয় বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতীয় নির্বাচনের সময়ে নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন গয়েশ্বর।
জাতীয়তাবাদী সাইবার দল নামের একটি সংগঠনের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পাকিস্তানের হাই কমিশনারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন,আপনারা (প্রধানমন্ত্রী) করলে হয় বন্ধুত্ব, আমরা করলে হয় ষড়যন্ত্র তাই না? কৃষ্ণ করলে লীলা খেলা, ভক্ত করলে দোষ।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করেন না ও বোঝেনও না। তিনি সব কিছু সোজাভাবে দেখেন।
জাসদের হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা ভোট কেন্দ্রে যে পরিমাণ ভোট বাতিল হয়, তাও তারা পান না। তারা খালেদা জিয়া সম্পর্কে নানা মিথ্যা কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, সময় ও যুগের চাহিদায় সংবিধান সংশোধন করতে হয়। মুক্তিযুদ্ধ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এগুলোতো সংবিধানে ছিল না।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার হলে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে টিকিট দেয়ার লোক খুঁজে পাবে না বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। শেখ হাসিনাকে বলব, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত অপকর্ম আরেকবার চেষ্টাও করবেন না।
বিদ্যুৎসহ নানা খাতের দুর্নীতি ও গুম খুনসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত বলে ভয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়তে চায় না বলে দাবি গয়েশ্বরের।
তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত। তবে সেটা শেখ হাসিনার অধীনে নয়।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, আত্মসমর্পণের চেয়ে পরাজয় অনেক গৌরবের আবার পরাজয়ের চেয়ে মৃত্যু আরও বেশি মর্যাদার। এই সরকারের পতন করতে আমাদেরকে যদি রাজপথে মৃত্যুবরণ করতে হয়, তার জন্যও আমরা প্রস্তুত।
‘দেশ আমাদের নেই’ এমন দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, যারা সরকারে আছেন, তাদের সিদ্ধান্তে দেশ চলে না। এটা দেখার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি।
সংগঠনের সভাপতি কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল প্রমুখ।
সূত্র: যুগান্তর
Discussion about this post