আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে অনড় রয়েছেন কবি, কলামিস্ট ও সমাজ চিন্তক ফরহাদ মজহার।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টু রোডের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, সেদিন অপহরণ করে আমাকে খুলনায় নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে ফরহাদ মজহার নিজেই খুলনায় গিয়েছিলেন বলে দাবি করে আসা পুলিশও তাদের বক্তব্য থেকে সরেনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিরুদ্দেশ হওয়ার ঘটনায় জবানবন্দি ও পুলিশের তদন্তে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের মধ্যে ‘গরমিলের’ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডাকা হয়েছিল।
এর আগে গত ৩ জুলাই ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর যশোরে উদ্ধার হন ফরহাদ মজহার। এর পর ডিবি কার্যালয় হয়ে আদালতে অপহরণের বিষয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখান থেকে গত ১২ জুলাই শ্যামলী রিং রোডের বাড়ি হক গার্ডেনে ফেরেন ফরহাদ মজহার।
উদ্ধারের পর ঢাকার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার জানিয়েছিলেন, তাকে তিনজন ব্যক্তি অপহরণ করে মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে খুলনায় নিয়ে ছিল।
তবে তার বক্তব্যে সন্দেহ প্রকাশ করে পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকটি স্থানের সিসি ক্যামেরার ভিডিওচিত্র এবং অর্চনা রানি নামে এক নারীর কথা বলা হলে এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে কবি ও কলামনিস্ট ফরহাদ মজহারকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে যান স্ত্রী ফরিদা আখতারও।
ফরহাদ মজহার এবং অপহরণের মামলাটির বাদী ফরিদাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর দুপুর সোয়া ১টার দিকে তারা দুজন ডিবি কার্যালয় থেকে বেড়িয়ে যান।
এরপর ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেন, ফরহাদ মজহার আদালতে যে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদেও একই কথা বলেছেন। তার কাছ থেকে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
“ফরহাদ মজহারকে খুলনার ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দির সাথে তদন্তে মিল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা আদালতে যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, সেখান থেকে একচুলও নড়ছেন না।”
মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, “তারা (ফরহাদ-ফরিদা) আমাদের বলেছেন, আপনাদের তদন্ত আপনারা করেন, আমরা আমাদেরটা দেখব।”
একটি সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তাদের দুজনের সঙ্গে সাড়ে ১২টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত কথা বলেছেন।
এ সময় “তারা (ডিবি) বলেছেন, ‘ঘটনাটি অপহরণের কিছু নয়’। জবাবে ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আপনাদের তদন্তে অন্য কিছু বের হলে হবে সে অনুযায়ী আপনারা কাজ করেন। কিন্তু আমাদের বক্তব্য যেটা সেটা আদালতেই দেওয়া হয়েছে।”
সূত্র: শীর্ষনিউজ
Discussion about this post