বাংলাদেশে অপহৃত লেখক-সাংবাদিক ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার বলেছেন, তিনি ক্রমশ: তাঁর স্বামীর পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত হয় পরছেন।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিস আক্তার বলেন, তাঁর স্বামীর জন্য দেশের সকলকে এগিয়ে আস উচিত।
”আমি তাঁকে জীবিত, অক্ষত ফেরত পেতে চাই, আমি এ’বিষয়ে কোন আপোষ করবোনা।” ফরিদা আক্তার বিবিসি বাংলাকে বলেন।
”দেশের মানুষ, সরকার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী,সবার কাছে আমার একটি আবেদন, আমি তাঁকে জীবিত এবং অক্ষত অবস্থায় ফেরত পেতে চাই।”
সোমবার ভোরে ঢাকার শ্যামলী এলাকায় নিজ বাসা থেকে অজ্ঞাত পরিচয় লোকজন মিঃ মজহারকে নিয়ে যায় বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
খবর পেয়ে পুলিশ তাঁর বাসায় যায়, এবং খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের অভিযান হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফরিদা আক্তার বলেন দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর তার ভরসা আছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি মনে করেন এই অপহরণ সবার উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।
”আমি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে উদ্যোগ দেখতে চাই,” তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন।
ঢাকায় শ্যামলীর নিজের বাসা থেকে ভোর পাঁচটার দিকে একটা ফোন পেয়ে বের হয়ে যান বামপন্থী চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার, যিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো লেখা-লেখি করেছেন ।
ফরিদা আক্তার বলেন যে সকালের দিকে তাঁর স্বামী তাকে ফোন করে জানান যে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে।
”কতক্ষণ পরে একটি ফোন আসলো, তিনি বললেন, মনে হয় ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, মেরে ফেলবে,” মিস আক্তার বলেন।
”তাঁর গলাটা শুনে বোঝা যাচ্ছিল উনি ভীত অবস্থায় ছিলেন।”
কিছুক্ষণ পরে আবার ফোন করে ফরহাদ মজহার মিস আক্তারকে বলেন যে অপহরণকারীরা টাকা চাইছে, টাকা দিলে ছাড়বে।
”সকালের দ্বিতীয়বারের ফোনে বললেন, ১০টার মধ্যে ৩৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে,” ফরিদা আক্তার বলেন। ”তবে কখন কোথায় দিতে হবে, সেসব বলেন নাই।”
ফরিদা আক্তার বলেন তিনি কোন গোষ্ঠীকে এই অপহরণের জন্য সন্দেহ করছেন না।
”উনি লেখা-লেখি করেন, সবাই জানেন উনি কী ধরণের চিন্তা-ভাবনা করেন, কাজেই এখানে সন্দেহ করার মত কিছু নেই,” তিনি বলেন।
তিনি বলেন, তারা যখনই যা তথ্য পাচ্ছেন সেটা পুলিশকে দিচ্ছেন। পুলিশ তাদের মত করে কাজ করছে এবং তাদের ওপর আস্থা রয়েছে। কিন্তু তিনি চান যাতে দেশের সবাই এ’বিষয়ে এগিয়ে আসে।
এর আগে, পুলিশ শ্যামলীর ঐ বাসার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানায়, তারা দেখেছেন মি: মজহার একা স্বাভাবিকভাবেই বাসা থেকে বের হয়ে যান।
তেজগাঁও জোনের উপ-কমিশনার বিপ্লব সরকার বিবিসিকে বলেন, এরপর কী ঘটেছে সেটা তাদের কাছে এখনো রহস্য।
“এ রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তাও নিচ্ছি। এর বেশি কিছু এখন বলা সম্ভব না”।
অপহরণ করা হয়েছে এমন তথ্য দিয়ে আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
Discussion about this post