অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহসিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন হামলাকারী সবাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদের কর্মী-সমর্থক।
তবে হাছান মাহমুদের দাবি, এ হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরের একটি গাড়ির ধাক্কায় ২ জন পথচারী আহত হলে অন্যরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ হামলা চালায়। পথচারীদের হামলায় মির্জা ফখরুলসহ অন্যরা আহত হয়েছে।
হাছান মাহমুদের এ বক্তব্যে রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে নানান প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বস্তরে চলছে সমালোচনার ঝড়। হাছান মাহমুদের এ বক্তব্যকে বিশ্লেষকরা আষাঢ়ে গল্প বলে আখ্যায়িত করছেন। হাছান মাহমুদই এ হামলার নাটেরগুরু বলে অনেকে মন্তব্য করছেন।
হামলার পর মির্জা ফখরুল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, রামদা, হকিস্টিক, আগ্নেয়াস্ত্রসহ লাঠিসোটা নিয়ে ৩০-৪০ জন যুবক অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। তিনি এটাকে অবিশ্বাস্য হামলা বলে অভিহিত করেছেন।
তারপর প্রত্যক্ষদর্শীরাও বলেছেন, সকাল ১০ টার দিকে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। এসময় গাড়ি বহরটি ইছাখালী বাজারে আসার পরই ২৫-৩০ জন যুবক রামদা, হকিস্টিক, আগ্নেয়াস্ত্রসহ লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে গাড়িগুলোর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়।
এখন হাছান মাহমুদের দাবি যদি সত্য হয়, তাহলে পথচারীরা তাৎক্ষণিক রামদা, হকিস্টিক, আগ্নেয়াস্ত্র ও এত লাঠিসোটা পেলো কোথায়? গাড়িবহরের ধাক্কায় কোনো পথচারী আহত হওয়ার কারণে যদি হামলা চালানো হয়ে থাকে, তাহলে হামলা করে তারা পালিয়ে গেল কেন? তারাতো স্থানীয়দের নিয়ে গাড়িগুলো আটক করে বিচার দাবি করার কথা ছিল। আর গাড়িবহরের ধাক্কায় কোনো পথচারী আহত হয়েছে বলেও দেখেননি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
তারপর বিএনপি নেতা মহসিন অভিযোগ করেছেন, রাঙামাটি যাওয়ার পথে প্রথমে তারা রাণীরহাটে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বাধার সম্মুখিন হন। পরে রাস্তা পরিবর্তন করে কাপ্তাই সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে ইছাখালী বাজারে ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা চালায়।
এছাড়া রাঙ্গুনিয়ার রাজনগর রাণীরহাট কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি জাহেদুল ইসলামের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেও বুঝা যাচ্ছে এ হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। সকালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে ওইখানে জমায়েত হওয়ার জন্যও জাহেদুল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছেন। রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিবকে পা রাখতে দেবেন না বলেও ঘোষণা দেন জাহেদুল।
এসব কারণে রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হাছান মাহমুদের দাবি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ হামলার নাটেরগুরুই হলেন হাছান মাহমুদ। এ নারকীয় হামলার বিচার যদি করার সরকারের সদিচ্ছা থাকে, তাহলে দলীয় নেতা হাছান মাহমুদকে আগে গ্রেফতার করতে হবে। কারণ, হাছান মাহমুদের ইশারাতেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।
Discussion about this post