অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ হচ্ছে না। সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের দুর্নীতি, লুটপাট, দখলবাণিজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লিখলেই সাংবাদিকদের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের স্টিম রোলার।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডের নামে তাদের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। সরকারের এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এসব ঘটনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
সাংবাদিক নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় সোমবার সরকারদলীয় একজন এমপিকে নিয়ে রিপোর্ট করায় হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক সমাচার পত্রিকার সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিককে আইসিটি আইনে করা একটি ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারের নির্দেশে গোয়েন্দা সংস্থা দুর্নীতি-লুটপাটে জড়িত আওয়ামী লীগের এমন ৮০ জন এমপির একটি তালিকা করেছে। আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তারা আর মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলেও জানা গেছে। এনিয়ে পূর্ব পশ্চিমবিডি ডটকমসহ আরও কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় নিউজ হয়েছে।
জানা গেছে, এই ৮০ জন এমপির মধ্যে হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের নামও আছে। এনিয়ে গত ৮ জুন হবিগঞ্জের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক সমাচার একটি নিউজ করেছে। এতে এমপি মজিদ ক্ষুব্ধ হয়ে সমাচার পত্রিকার সম্পাদক ও হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিকের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ আদালতে আইসিটি আইনে মামলা করেন। সোমবার সেই মামলায় গোলাম মোস্তফা রফিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জের) এমপি আব্দুল মজিদ খানের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অনেক অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। সরকার থেকে বরাদ্দ যা নেন সবই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বন্টন করে দেন। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরাও তার ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি হবিগঞ্জ শহরে শত কোটি টাকা খরচ করে একটি আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর এমপি এডভোকেট আবু জাহির ও জেলা সেক্রেটারি এমপি মজিদের লুটপাট দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না। স্থানীয় সাংবাদিকরাও তাদের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে রোষানলের শিকার হয়। কিছু দিন আগেও এমপি আবু জাহির একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করেছে। জানা গেছে, ওই সাংবাদিক এখন পর্যন্ত হবিগঞ্জে ঢুকতে পারছে না।
জানা গেছে, হবিগঞ্জে এখন চলছে আওয়ামী লীগের দুই এমপির শাসন। সব কিছু চলছে তাদের ইচ্ছেমতো। আওয়ামী লীগের এই এমপির অত্যাচার নির্যাতনে পুরো হবিগঞ্জবাসী এখন অতিষ্ঠ। তারা এখন মুক্তির প্রহর গুনছে।
Discussion about this post