শাহবাগে বিহঙ্গ পরিবহনে পেট্টল ঢেলে আগুন দিয়ে ১১ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত বলে দলটির নেতারাই অকপটে স্বীকার করেছেন বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
দলটি মনে করে, এর মধ্য দিয়ে বিএনপির বিগত আন্দোলনের সময় যে নাশকতা হয়েছে, তার সঙ্গে কারা জড়িত তা বেরিয়ে এসেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির বিগত আন্দোলনে রাজধানীর শাহবাগে বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। বিহঙ্গ পরিবহন নামে ওই বাসটির মালিক একজন আওয়ামী লীগ নেতা। ওই বাসের যিনি মালিক তিনি (আওয়ামী লীগ নেতা) তার নিজ পরিবহনে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে ওই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ সত্যতা এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ থেকেই বেরিয়ে এসেছে।
বরিশালের অতিগুরুত্বপূর্ণ নেতা মেহেন্দিগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য বর্তমানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তিনি নিজেও এ কথা বলেছেন। যদিও এই কথাগুলো আমরা বারবার বলে এসেছি।
রিজভী বলেন, এমনকি ওই সময় ছাত্রলীগ নেতাদের ফেসবুকেও স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে- ‘ঘটনা ঘটাচ্ছি আমরা, আর দোষ হচ্ছে বিরোধীদলের।’ সেটার এক জলজ্যান্ত সত্য উচ্চারণ করলেন বরিশালের আওয়ামী লীগের নেতারাই। আওয়ামী নেতা-কর্মীদের সৃষ্ট জ্বালাও- পোড়ার দায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর চাপিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়।
তিনি বলেন, এই চক্রান্তমূলক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দকে জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জা করেই বিরোধীদলের ওপর হামলা-মামলা-কারে নির্যাতন-এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার করা হয়। বিএনপির আন্দোলনকে গণবিচ্ছন্ন করার জন্য সর্বনাশা খেলায় মেতে ওঠেছিলো আওয়ামী সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান ঢালী, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, এম এ মালেক, আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর নেতা কাজী আবুল বাশার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সাবেক এমপি ও বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মইদুল ইসলাম বরিশাল-৪ আসনের সরকার দলীয় এমপি পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেন।
মইদুল বলেন, ‘ঢাকায় চলাচলকারী বিহঙ্গ পরিবহনের চেয়ারম্যান এমপি পঙ্কজ দেবনাথ ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে তারই নির্দেশে ওই পরিবহনের একটি বাস পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। দলীয় মনোনয়ন বাগাতে চরম ঘৃণ্য এবং নৃশংস এ কাজ করেন তিনি। পরে সেই ঘটনা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন করে তার মমতা’র সুযোগে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নেন পঙ্কজ।’
কেবল বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাই নয়, এমপি পঙ্কজের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে হাওয়া ভবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও করেন মইদুল।
সূত্র: যুগান্তর
Discussion about this post