ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেডকে (বিএইচইএল) বিনিয়োগের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম তহবিল নরওয়ের ওয়েলথ ফান্ড। নরওয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই তহবিল পরিচালনা করে।
বাংলাদেশের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে পরিবেশগত ঝুঁকিতে ফেলার কারণে ভারতীয় ওই কোম্পানিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নরওয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজ শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে। উল্লেখ্য, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হলো ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপির প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়েছে। প্রকৌশল ও উৎপাদন কোম্পানি বিএইচইএলের বেশির ভাগ মালিকানা ভারত সরকারের হাতে। নরওয়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ওই তহবিলের নিয়মকানুন পর্যবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে ‘পরিবেশকে মারাত্মক ক্ষতির ঝুঁকি’তে ফেলার কারণে নরওয়েজীয় ফান্ডের বিনিয়োগের তালিকা থেকে ওই কোম্পানিকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ওই তহবিলের নৈতিকতা পর্যবেক্ষণকারী পরিষদ আরও জানায়, এই এলাকার ‘সর্বজনীন অনন্য পরিবেশগত গুণাবলি’ রয়েছে। কোনো কোম্পানির কারণে সেখানকার পরিবেশের তীব্র ক্ষতিসাধন হলে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
৮৫ হাজার ২০০ বিলিয়ন ইউরোর এই তহবিল পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘দ্য ব্যাংক অব নরওয়ে’। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় এই ফান্ডের বিনিয়োগের তালিকায় থাকা চীনের তেল কোম্পানি পেট্রোচায়না ও ইতালিয়ান কোম্পানি লিওনার্দোকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
চীন, কানাডা ও ইন্দোনেশিয়ায় পেট্রোচায়নার প্রায় ৬৫ জন জ্যেষ্ঠ নির্বাহীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের তদন্ত চলছে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালের মধ্যে ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, পানামা ও আলজেরিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কিছু মামলা চলছে। এ কারণে ওই কোম্পানি দুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ওই তহবিলে বিশ্বের প্রায় নয় হাজার কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। এই তহবিলে অংশীদার হতে হলে কিছু নৈতিকতা মেনে চলতে হয়। এর অংশীদার হতে হলে তামাক উৎপাদন, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা কোম্পানি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা কোম্পানিতে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ। পাশাপাশি এই তহবিলের অংশীদারত্ব থাকতে হলে যেসব কোম্পানির ব্যবসার বড় অংশ কয়লানির্ভর এবং পরিবেশগত ঝুঁকিতে ফেলা কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করা যাবে না।
এয়ারবাস, বোয়িং, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং ওয়ালমার্টের মতো বড় কোম্পানিসহ শতাধিক কোম্পানি ওই ফান্ডের কালো তালিকাভুক্ত। এ ছাড়া পর্যবেক্ষণে রয়েছে বেশ কয়েকটি কোম্পানি।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post