অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক সময়ের পালিত খুনি বেনজীরকে নিয়ে নতুন করে আর লেখার কিছু নাই। তার সব কিছুই এখন জনসম্মুখে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বিগত কয়েক বছরে মুখোশের আড়ালে বেনজীর কী করেছে সবই এখন পরিস্কার। এতদিন বেনজীর এদেশের মানুষের কাছে শুধু একজন খুনি হিসেবে পরিচিত ছিল। বিগত কয়েক বছরে এদেশের যত গুম-খুন হয়েছে সবগুলোর মাষ্টার মাইন্ড ছিল এই বেনজীর। এসব গুম-খুনের মাধ্যমে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। বেনজীরের খুনি উপাধির সাথে এখন আরেকটি যোগ হয়েছে দুর্নীতিবাজ।
চাকরি জীবনে বেনজীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে কী পরিমাণ দুর্নীতি করেছে সেগুলো কিছুদিন ধরে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা যে এতটা দুর্নীতিতে লিপ্ত হতে পারে এটা মানুষ বিশ্বাসই করতে পারছে না। সারাদেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বেনজীরের অবৈধ সম্পদ। আর ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের একটি আলিশান টাওয়ারে একদিনে চারটি ফ্লাট কেনার ঘটনা সচেতন মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। এ যেন রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
মজার বিষয় হল-এই খুনি ও দুর্নীতিবাজ বেনজীরই একদিন এদেশে সবচেয়ে সৎ ও নীতিবান ব্যক্তি ছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার জিহাদ ঘোষণার কথাতো সবারই মনে থাকার কথা। তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছিলেন-আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করছি। কিন্তু এই সেনাপতি নিজেই যে এদেশের বড় দুর্নীতিবাজ সেটা তখনো মানুষ জানতে পারেনি।
আরও মজার বিষয় হল-এই খুনি আর মহা দুর্নীতিবাজকেই রাষ্ট্র শুদ্ধাচার পুরস্কার দিয়েছিল। ২০২১ সালে রাষ্ট্র তাকে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হিসেবে সনদ দিয়েছিল। শুদ্ধাচার পুরস্কারে একটি সনদপত্র, একটি ক্রেস্ট এবং এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তাকে ২০২০-২১ সালে তাকে শুদ্ধাচার পুরস্কার দেয়। অথচ, দুদকের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ও তার পরিবার ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রায় ৮৭ দশমিক ৯ একর জমি কিনেছিলেন।
ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি অনুসারে, শুদ্ধাচার বলতে সাধারণভাবে নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ বোঝায়। এর মাধ্যমে একটি সমাজের মানদণ্ড, নীতি ও প্রথার প্রতি আনুগত্যও বোঝানো হয়। ব্যক্তিপর্যায়ে এর অর্থ বোঝানো হয় কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে কর্ম সম্পাদন ও যাপিতজীবন।
কিন্তু তথ্য বলছে, এই শুদ্ধাচার পুরস্কার পাওয়ার সময় বেনজীর এসব সৎ ও নৈতিক গুনাবলীর ধারে কাছেও ছিলেন না। শুধু শেখ হাসিনার খুন-গুমের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্যই তাকে এসব পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।
সচেতন মানুষ মনে করছেন, এই খুনি ও দুর্নীতিবাজ বেনজীরের শুদ্ধাচার পুরস্কার বাতিল হওয়া উচিত। এমনকি তার বিপিএম উপাধিও বাতিল হওয়া উচিত। একজন খুনি ও দুর্নীতিবাজ কখনো একটি বাহিনীর মডেল হতে পারে না।
Discussion about this post