অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
হাওর এলাকার মানুষের ধানই প্রধান সম্বল। শুধু একটি ফসলই মাত্র তারা ঘরে তোলতে পারে। কিন্তু, ভারত থেকে নেমে আসা পানি এবার কৃষকের সেই সম্বলটুকুও নিয়ে গেছে। হাওর অঞ্চল তথা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও জামালপুরের কয়েক লাখ পরিবার এখন একেবারে নি:স্ব হয়ে গেছে। তাদের শেষ ভরসা ছিল হাওরের মাছ। কিন্তু, ভারত থেকে ইউরেনিয়াম মিশ্রিত পানি ঢুকে সেই স্বপ্নটুকুও শেষ করে দিয়েছে। হাওরের মাছগুলোও এখন মরে পানির ওপর ভাসছে। এমনকি এসব মাছ খেয়ে এখন কৃষকের ফার্মের হাঁসও মারা যাচ্ছে। জানা গেছে, খাবার না থাকার কারণে এখন কৃষকেরা তাদের গবাদি পশুগুলোও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।
এরমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আজ হাওরের ৩ লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে আগামী ১০০ দিন প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল ও ৫০০ করে নগদ টাকা ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আর যারা ত্রাণ নেবেন না তাদের জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে চাল ও ১০ টাকা কেজি দরে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
সরকারের এ অনুদান প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পাবেন নাকি সরকারি দলের নেতাকর্মীদের ঘরে যাবে এনিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ, কিছু দিন আগে গরিবদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দামে চাল বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা চাল বিতরণ করতে গিয়ে ব্যাপক লুটপাট করেছে। এনিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু, কোনোভাবেই দলীয় নেতাকর্মীদের এ লুটপাট বন্ধ করতে পারেনি সরকার। প্রকৃত গরিবদের বাদ দিয়ে শুধু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নাম দিয়ে তালিকা করেছে। বলতে গেলে, গরিবদের মাঝে বিক্রির নামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সরকারি চাল হরিলুট করেছে।
অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে সরকারি চাল বিতরণের ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আগের মতো লুটপাট করতে পারে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তারা মনে করেন, সরকারের উচিত উচ্চমহল থেকে সর্বোচ্চ তদারকির মাধ্যমে এসব দুর্গত মানুষদের সহায়তা নিশ্চিত করা।
এমনটা নিশ্চিত করা না হলে ১০ টাকা চালসহ দুর্গতদের অন্যান্য সহায়তার মত দুর্গত হাওরবাসীকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল আর নগদ ৫০০ টাকার অনুদানও সরকারদলীয় নেতাকর্মীরাই বিভিন্ন নাম দিয়ে আত্মসাত করে ফেলবে। এ নিয়ে শুধু অভিজ্ঞ মহলই নয়, শঙ্কায় আছেন হাওরবাসীও।
Discussion about this post