যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে আশ্বাস দিয়েছিল শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস ও ড. মঈন খানদেরকে ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিদেশি শক্তিগুলো আসলে একতরফা নির্বাচনে কার্যকর কোনো ভুমিকাই পালন করেনি। বরং বিদেশিরা তলে তলে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে।
এরপরও ক্ষমতায় আসতে বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে মাজাভাঙ্গা বিএনপি নেতারা। এখনো তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে বিদেশিদের কাছে ধরণা দিচ্ছেন। গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে তারা বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন।
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরই বিএনপি নেতারা লাফালাফি শুরু করে। তারা মনে করেছিল যুক্তরাষ্ট্র আর আওয়ামী লীগকে চায় না। তখন থেকেই তারা যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
তারপর ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপির লাফালাফি আরো বেড়ে গেল। বিএনপি নেতাদের ভাবখানা এমন ছিল যে মির্জা ফখরুল, আমীর খসরু, মির্জা আব্বাস ও মঈন খানদেরকে বাইডেন এসে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবেন। আন্দোলন-সংগ্রাম ভুলে ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছিল বিএনপি নেতারা। এমনো শোনা গিয়েছিল যে কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবে সেটাও তারা ঠিকঠাক করে ফেলেছিল। সব শেষ ফলাফল? আমও গেল, সাতে ছালাও গেল।
দেখা গেছে, নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র বহু হুমকি ধামকি দিয়েছিল। বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করলে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিবে। সবার উপর ভিসানীতি প্রয়োগ করবে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশি সৈন্যদেরকে পাঠিয়ে দিবে-এমন খবরও শোনা গিয়েছিল। এমনকি শেখ হাসিনা যদি একতরফা নির্বাচন করে সরকার গঠনও করে তাহলে এক সপ্তাহও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।
কিন্তু বাস্তবতা হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন। পরিস্থিতি বলছে, নির্বাচন নিয়ে জাতিংসঘ ও যুক্তরাষ্ট্র যেসব বিবৃতি দিয়েছে সবই ছিল আইওয়াশ। এগুলো শুধু মানুষকে দেখানোর জন্য করেছে। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল-গত তিনদিন আগে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের লেখা কলাম। তার এই কলামই প্রমাণ করে যে বর্তমান সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক খুবই মধুর।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মেনে নিয়েছে। তারা এখন হাসিনার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। আর কিছু দিন আগে বাইডেন তো শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েই বলেছেন যে বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র। শেখ হাসিনার যে উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা সেটা পূরণেও পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
এখন প্রশ্ন হল-এরপরও বিএনপি নেতারা কিসের আশায় বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে? র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দিল। ভিসানীতি ঘোষণা করলো। নতুন শ্রমনীতির করলো। তারপরও তারা শেখ হাসিনার সরকারকেই আবার সমর্থন দিল। বিএনপি নেতারা কি এখনো বুঝতে পারছে না যে যুক্তরাষ্ট্র আসলে কী চায়?
এখনো বিএনপি নেতাদের বিদেশ নির্ভরশীলতা প্রমাণ করে দলটির অস্তিত্ব বলতে আর কিছু নাই। এদেশে কিছু করার মতো সক্ষমতা আর বিএনপির নাই। প্রাকৃতিক কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে বিএনপির পক্ষে আওয়ামী লীগকে আর কখনো ক্ষমতা থেকে সরানো সম্ভব হবে না। বিএনপি এখন জাতীয় পার্টির চেয়েও আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
Discussion about this post