বিরোধী দলের আন্দোলন ধীরে ধীরে চাঙ্গা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনে মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে রেখেছে। জামিন হওয়া সত্ত্বেও তারা কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। এর মধ্যে আবার শুরু হয়েছে গুমের সংস্কৃতি।
র্যাব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করায় আমেরিকার স্যাংশনের আওতায় পড়ে। এর পর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার ক্রসফায়ারে হত্যা ও গুম কার্যক্রম বন্ধ রাখে। ইদানীং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো শুরু করেছে গুম খুন।
গত ১৩ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১১.৩০ টায় অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৯-এ ধানমন্ডির ইবনে সিনা ডি ল্যাবের সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাধারী কতিপয় ব্যক্তি হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নূরুজ্জামান হাওলাদার সোহেলকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের পক্ষে গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠা প্রকাশ করে অবিলম্বে তার স্বামীর সন্ধান ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রী সোনিয়া রহমান দীপা।
১৬ অক্টোবর সোমবার দেয়া বিবৃতিতে সোনিয়া রহমান দীপা বলেন, তার স্বামী একজন পেশাজীবী এবং তিনি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসাল্টেশন সেন্টারে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসাবে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার বয়স এখন প্রায় ৪০ বছর। তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী বা বেআইনী কোনো কাজে অতীতে কখনো জড়িত ছিলেন না বা এখনো নেই। উপরন্তু তিনি বেশ কিছুদিন যাবৎ নানাবিধ শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তিনি সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি এবং তার ৩ ছেলে ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গত গত ১৩ অক্টোবর শুক্রবার ৯-এ ধানমন্ডি থেকে বাসায় ফেরার সময় কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কিছু লোক তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তার কোনো সন্ধান মিলছে না। বিভিন্ন থানা ও ডিবি অফিসসহ নানা স্থানে খোঁজ নেয়া হলেও কেউই তাকে আটক করার কথা কথা স্বীকার করছেন না। তাই তিনি সন্তান-সন্ততিসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
আজ ১৯ তারিখ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মোছা. নূরভানু বেগম বলেন, নিখোঁজ সোহেল তার একমাত্র পুত্র সন্তান। সে একজন কর্মজীবি এবং একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসাল্টেশন সেন্টারে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসাবে চাকুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। ঢাকার প্রায় সকল থানা ও ডিবি অফিসসহ নানা স্থানে খোঁজ নেয়া হলেও কেউই তাকে আটক করার কথা কথা স্বীকার করছেন না। তাই তিনি বয়োবৃদ্ধ স্বামী, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পুত্রবধু, নাতি-নাতনী সহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে জানা যায় নূরুজ্জামান হাওলাদার সোহেল জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। একজন সাধারণ রাজনীতিবিদকে এভাবে গুম করে ফেলা মানবাধিকারের লংঘন।
Discussion about this post