বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী শুধু শেখ হাসিনার জুডিশিয়াল খুনের শিকার হয়নি, গুমের শিকারও হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উপর শুধু অত্যাচার-নির্যাতন চালায়নি, কথিত যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বায়ুবীয় অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত থাকেনি , জামায়াত-শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ চারজন ব্যক্তিকে হাসিনা গুমও করেছে।
কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নামে হাসিনার ক্যাঙ্গারো কোর্টের পালিত বিচারপতিরা জামায়াতের সাবেক আমির ও বিশ্ব বরণ্যে ইসলামি চিন্তাবিদ অধ্যাপক গোলাম আযমকে আমৃত্য কারাদন্ড দেয়। কারাবন্দী অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর শোক শেষ হতে না হতেই বাসা থেকে জোরপূর্বক তার ছেলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আমান আযমীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় হাসিনার গুম বাহিনীর লোকজন। আজ পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
জামায়াতে ইসলামির নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মীর কাসেম আলীকে কথিত যুদ্ধাপরাধের ভিত্তিহীন অভিযোগে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা। মীর কাসেম আলী যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না, তার অপরাধ ছিল তিনি ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তা। বাংদেশের ইসলামী অর্থনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র।
তিনি গড়ে গেছেন এদেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এদেশের সবচেয়ে উন্নত হাসপাতাল। তিনি চালু করেছিলেন এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক নয়াদিগন্ত ও দিগন্ত টেলিভিশন। তার গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার হাজার মানুষ কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি করেছে। এই সফল মানুষটিকে সহ্য করতে পারেনি শেখ হাসিনা। ভারতের নির্দেশে শেখ হাসিনা তাকেও হত্যা করেছে।
আরও লক্ষণীয় বিষয় হল-মীর কাসেম আলীকে কথিত বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার পর তার বড় ছেলে ব্যারিস্টার আহম্মেদ বিন কাসেম আরমানকেও হাসিনার গুম বাহিনীর লোকজন রাতের বেলায় বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। আজ পর্যন্ত ব্যারিস্টার আরমানের কোনো খোঁজ মেলেনি। আরমানের শিশু কন্যাটি আজ প্রেস ক্লাবে গিয়ে আর্তনাদ করে বলছে-“আমার বাবাকে ফিরিয়ে দাও।” কিন্তু তার এই কান্না কি পাষান্ড শেখ হাসিনার কানে পৌছবে?
অধ্যাপক গোলাম আযম ও মীর কাসেম আলী জামায়াতের শীর্ষ নেতা ছিলেন। মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। প্রশ্ন হল-তাদের সন্তানদের কি অপরাধ ছিল? তাদেরকে গুম করা হল কেন? তারা যদি আত্মগোপনে গিয়ে থাকে তাহলে সরকার কেন তাদেরকে খুঁজে বের করছে না?
এছাড়াও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের দুইজন নেতা আল-মোকাদ্দিস ও ওয়ালিউল্লাহকে গুম করেছে হাসিনার গুম বাহিনীর সদস্যরা। শিবিরের এই দুই নেতার কি অপরাধ ছিল? তারা কোনো অপরাধ করে থাকলে দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচার করা যেত। তাদেরকে গুম করা হল কেন? কে দেবে এই জবাব?
বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবশ্যই আমান আযমী, ব্যারিস্টার আরমান, আল মোকাদ্দিস ও ওয়ালিউল্লাহকে গুম করার জন্য একদিন জবাব দিতে হবে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতা একদিন ছাড়তেই হবে। সেদিন প্রতিটি খুন, হত্যা, গুম ও অপহরণের জন্য শেখ হাসিনাকে জনতার আদালতের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। হয়তো সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।
Discussion about this post