দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মো: শাহাবুদ্দিন চুপ্পু। অতীতে রাষ্ট্রপতির মতো সর্বোচ্চ পদে সুপরিচিত ও বিজ্ঞজনদেরকে এ পদে বসানো হলেও এবার সেটা রক্ষা করেনি শেখ হাসিনা। শাহাবুদ্দিন চুপ্পু একজন অখ্যাত ব্যক্তি। তিনি কর্মজীবনে দুদকের কমিশনার ছিলেন। কর্মজীবন শেষে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলটির অভ্যন্তরীণ কয়েকটি কমিটির সাথে কাজ করতেন চুপ্পু। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও তাকে ভালভাবে চিনে না। শাহাবুদ্দিন চুপ্পু যে রাষ্ট্রপতি হবেন এটা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই জানতেন না।
এদিকে শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের লোকজন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন-এমন একজন অপরিচিত ও অখ্যাত ব্যক্তিকে শেখ হাসিনা কেন রাষ্ট্রপতি বানালেন? তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার আগ পর্যন্ত কেন তার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পূর্বাভাস দেয়া হয়নি? শেখ হাসিনা কেন তার বিষয়ে এতটা গোপনীয়তা অবলম্বন করেছেন?
অ্যানালাইসিস বিডির পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি অনুসন্ধান করা হয়েছে। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি করতে শেখ হাসিনার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। তার ছোট বোন শেখ রেহানা তাকে বাধ্য করেছে চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি করতে।
যেভাবে রাষ্ট্রপতি হলেন চুপ্পু
এবার জেনে নিন অখ্যাত শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কিভাবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক চেয়ারে বসলেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বেশি ক্ষমতা নেই। সব কাজই তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে করতে হয়। এভাবেও বলা যায় যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারেন না। তারপরও রাষ্ট্রপতি গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পদ। তাহলে শেখ রেহানা কেন চুপ্পুর মতো একজন অখ্যাত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করতে তার বোনকে বাধ্য করেছেন?
একটি বিষয় সবারই জানা যে শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ইসলামি ব্যাংকের ভাইসচেয়ারম্যান ছিলেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর ইসলামি ব্যাংকে তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছিল বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকসহ দেশের ৯টি ব্যাংক যার দখলে আছে সেই এস আলম। শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে এই পদে নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্যই ছিল তার মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে হাতে রাখা।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে রেহানার সাথে এস আলমের সু-সম্পর্ক বেশি। প্রতিবছরই শেখ রেহানা এস আলম থেকে শত শত কোটি টাকা নিচ্ছে। আর রাষ্ট্রপতির চেয়ারে শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে বসানোর জন্য কয়েক মাস ধরেই লবিং করে আসছিল এস আলম। একটা পর্যায়ে এসে ১ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি করতে রাজি হন শেখ রেহানা।
জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি পদে দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার আগের দিন রেহানা শেখ হাসিনাকে পরিষ্করভাবে জানিয়ে দিয়েছিল যে তুমি দেশের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি হবে আমার লোক। শাহাবুদ্দিনকে ছাড়া অন্য কাউকে রাষ্ট্রপতি পদে বসানো যাবে না। অন্য কাউকে রাষ্ট্রপতি করলে দুই বোনের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করতে পারে এবং এটা বাইরে চলে গেছে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে শেখ হাসিনা শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকেই রাষ্ট্রপতি করতে বাধ্য হন।
অসমর্থিত আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, শাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি করার জন্য এস আলম শেখ রেহানাকে যে টাকা দিয়েছে সেটা থেকে শেখ হাসিনাও পরে ভাগ নিয়েছে।
Discussion about this post