রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

ড. সেলিমের মৃত্যুতেও কুয়েট জঙ্গীমুক্ত হয়নি!

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
in slide, বাংলাদেশ
Share on FacebookShare on Twitter

৩০ নভেম্বর ২০২১ সাল। এখন থেকে ৮-৯ মাস আগের ঘটনা। বিকেলে খুলনা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন তার বাসায় মত্যুবরণ করেন। তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বলে মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে। তবে তার মৃত্যু ছিল অস্বাভাবিক। তিনি দুই দফা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। ছাত্রলীগের জঙ্গীদের বিচারের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছিল কর্তৃপক্ষ।

ড. সেলিম কুয়েটের লালন শাহ আবাসিক হলের প্রভোস্টের দায়িত্বে ছিলেন। কুয়েটের বিভিন্ন হলে প্রতিমাসেই ছাত্রদের ভিতর থেকে দুইজনকে ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করা হয়। ডিসেম্বর মাসের জন্য লালন শাহ আবাসিক হলের ডাইনিং ম্যানেজার হওয়ার জন্য ছয়-সাতজন ছাত্র আবেদন করে। কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান গ্রুপের দাবি ছিলো তাদের গ্রুপের ছাত্রদের মধ্য থেকে ম্যানেজার করতে হবে। তার প্রতিপক্ষ সভাপতির গ্রুপও ম্যানেজার হতে চেয়েছে। ২৯ নভেম্বর রাতে ডাইনিংয়ে এ নিয়ে বৈঠকও হয়। তাতে কোনো সমাধান আসেনি। এরপর থেকেই সেজান ও তার অনুসারীরা হলের প্রভোস্ট ড. মো. সেলিম হোসেনের ওপর চাপ অব্যাহত রাখে। অসদাচরণ করে।

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী/ জঙ্গীরা ডাইনিং ম্যানেজার হতে চাওয়ার কারণ তারা খাবারের ফান্ড থেকে বিশাল অংশ টাকা লুট করে। এটা ওপেন সিক্রেট। প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই লুটপাট অব্যাহত আছে। ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখ দুপুর ১২ টার দিকে জঙ্গী সাদমানের অনুসারীরা ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিমের গতিরোধ করে তার সাথে তর্কে জড়ায়। হুমকি -ধামকি দেয়। এরপর তারা ড. সেলিমের পিছু নিয়ে তড়িৎকৌশল ভবনে ড. সেলিমের রুমে যায়। সেখানে তারা আরো আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন৷

ঘটনাস্থলে সেজানের অনুসারীরা সংখ্যায় ৪০-৪২ জন ছিল। বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাদের দেখা গেছে। কিন্তু কক্ষের ভিতরে কোনো সিসি ক্যামেরা ছিলোনা। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন ড. সেলিমকে সেখানে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের কথার বাইরে গেলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন অভিযোগ করেন, ‘‘ঘটনার দুই-তিন দিন আগে রাতে আমার স্বামীকে ফোন করে কেউ একজন উচ্চস্বরে কথা বলছিলেন৷ তাকে বলছিলো, ক্যান্টিনের ম্যানেজার আমাদেরকেই করতে হবে। তখন আমার স্বামীকে বিচলিত দেখাচ্ছিল৷’’

ড. সেলিমের স্ত্রী বলেন, ঘটনার দিন একটার সময় বাসায় আসার কথা থাকলেও তিনি বাসায় ফেরেন দেড়টার পর। সাধারণত তিনি বাসায় ফিরে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আদর করেন। তারপর অন্য কাজ করেন। কিন্তু ওই দিন তিনি বাচ্চাকে আদর না করে ওয়াশরুমে চলে যান। ‘‘তার চুলগুলো ছিলো এলোমেলো৷ চোখ দুটো ছিল লাল। আমাকে বলল, ‘আমার আসতে দেরি হলো স্টুডেন্টরা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল৷’ এরপর তিনি ওয়াশরুমে চলে যান। বেশ কিছুক্ষণ পর বের না হওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়। কোনো সাড়া দিচ্ছিলেন না। পরে আমরা ওয়াশরুমের ভিতরে তাকে নিথর বসে থাকতে দেখি। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্যারের মৃত্যুর পর আমরা শিক্ষক সমিতি বৈঠক করে প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র, শিক্ষকদের বক্তব্য শুনেছি৷ ভিডিও ফুটেজ ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছি৷ তাতে আমরা সবাই একমত হয়েছি যে ড. সেলিম স্যারের মুত্যু কোনোভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। মানসিক অত্যাচারের মাধ্যমে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শুরুর অনুরোধ জানিয়েছি।’’

ছাত্র ও শিক্ষকদের চাপে বিশ্ববিদ্যালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সে কমিটির সুপারিশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সেজানসহ চারজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। ৪০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়। এগুলো ছিল কুয়েট কর্তৃপক্ষের আইওয়াশ। এর মাধ্যমে তারা ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনকে কন্ট্রোল করেছে। ড. সেলিমের পরিবার মামলা করতে চাইলেও হাসিনার চাপ থাকার ফলে থানা মামলা নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও পরিবারকে দীর্ঘসূত্রিতা/ অবহেলা করে মামলার ব্যাপারে পরিবারকে নিরুৎসাহিত করেছে।

ছাত্রলীগ সেক্রেটারি জঙ্গী সেজান ও সাঙ্গ-পাঙ্গরা স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তির ঘোষণা হলেও তারা কেউই হল ছাড়েনি। কুয়েট প্রশাসনের সহায়তায় তারা নিয়মিত মাস্তানী করে যাচ্ছে কুয়েটে। তারই অংশ হিসেবে সিএসই’র ছাত্র জাহিদকে নির্যাতন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভিকটিম জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং চিকিৎসাধীন জাহিদকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

বহিষ্কৃত সেজানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ জঙ্গীদের হাতে মারধরের শিকার জাহিদুর রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পর হাসপাতালে ভর্তি অবস্থাতেই ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

কুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার মো. সাদেক হোসেন প্রামানিক বাদী হয়ে জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। গত রোববার (১১ই সেপ্টেম্বর) রাত ৯ টায় ড. এম এ রশিদ হলের গেস্ট রুমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জাহিদকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ছাত্র শিবিরের কর্মী হিসেবে অভিহিত করে জাহিদকে রাত ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত গেস্ট রুমেই নির্মমভাবে পেটায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। টানা তিন ঘন্টা নির্যাতনের পর জাহিদুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আওয়ামী লীগের কব্জায় থাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জাহিদুরের নামে মামলা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুর রহমানকে ওই রাতেই পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

ড. সেলিমের মৃত্যুতে কোনো মামলা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। তারই প্রেক্ষিতে বহু সন্ত্রাসী ও জঙ্গীর আখড়া তৈরি হয়েছে কুয়েটে। এর প্রত্যক্ষ মদদদাতা কুয়েট প্রশাসন। তারা বৈধ ছাত্র জাহিদের ওপর অবৈধ ও বহিষ্কৃত ছাত্রদের নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নিলেও অসহায় ছাত্র জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এর বিরুদ্ধে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের সোচ্চার হওয়া উচিত। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় জঙ্গীমুক্ত করার অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে। আর এর উদ্যোগ ছাত্রদেরই নিতে হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ‘হেল্প সেল’ এর তৎপরতা বন্ধ করতেই ছাত্রদল নেতা নুরুকে হত্যা?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD