অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গুম-খুন, নির্যাতন ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে শেখ হাসিনার গুম বাহিনী র্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর এবার বাহিনীটিকে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টিসহ আন্তর্জাতিক ১২টি মানবাধিকার সংগঠন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারিকে দেয়া ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের চিঠির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই র্যাব কর্মকর্তা ও সংস্থাটির সদস্যদের মধ্যে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ যদি এখন শান্তি মিশনে র্যাবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দেয় তাহলে বাহিনীটি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন র্যাবের গুম-খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য শান্তি রক্ষা মিশন থেকে বাদ দিতে সংস্থাটির আন্ডার সেক্রেটারির বরাবর একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে তারা র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংযুক্ত কাগজপত্রও দিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েব সাইটে এই চিঠির কথা প্রকাশ করেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে, দেশের ভেতরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে কর্মকর্তাদের পুরষ্কার হিসেবে শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হয়, বিশেষ করে র্যাব সদস্য যাদের অনেকের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং গুমের অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়ার কাছে দেয়া চিঠিতে আহ্বান জানানো বলা হয়েছে, র্যাবে কাজ করেছেন এমন সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শান্তিরক্ষা কর্মসূচি থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত।
এদিকে, ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের চিঠির কথা ছড়িয়ে পড়ার পরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে র্যাবের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই র্যাবের ভেতর অস্থিরতা বিরাজ করছিল। এখন জাতিসংঘের শান্তি মিশনে র্যাবকে বাদ দেয়ার চিঠির কথা প্রকাশের পর তাদের সেই অস্থিরতা আরও বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, র্যাবের অনেক কর্মকর্তা এখন আর সংস্থাটিতে থাকতে চাচ্ছেন না। বাহিনীর সদস্যরাও আগের জাযগায় ফিরে যেতে চাচ্ছেন। কিন্তু সরকারের চাপে আর চাকরি রক্ষার কারণে তারা র্যাব ছেড়ে যেতে পারছেন না। এমনকি এসব নিয়ে এখন বাহিনীটির ভেতরে অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব চরম আকার ধারণ করছে বলেও জানা গেছে।
জানা গেছে, বিগত দিনের গুম-খুন আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য র্যাব সদস্যরা উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকে দায়ী করছেন। বিশেষ করে সব কিছুর জন্য তারা বেনজির আহমদসহ শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়ী করছেন। তাদের বক্তব্য হল-বেনজির আহমদ সরকার থেকে নিজের সুবিধা নিতে আমাদের দিয়ে এসব অপকর্ম করিয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের চাপের কারণেই আমরা কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে মানুষকে হত্যা করেছি। এসবের দায় এখন আমরা নিবো কেন?
আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ আর সেনাবাহিনী থেকে নতুন করে কেউ আর র্যাবে আসতে চাচ্ছে না। তারা মনে করছেন-র্যাবে যাওয়া মানেই কালো তালিকার অন্তর্ভূক্ত হওয়া। তাই কেউ আর র্যাবে এসে কালো তাকিলায় পড়তে চাচ্ছেন না।
Discussion about this post