বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

মধ্যরাতে পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কী ঘটেছিলো

ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
in slide, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

ঢাকার সদরঘাট থেকে শত শত যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া অভিযান-১০ নামের লঞ্চটির যাত্রীরা বলছেন, লঞ্চটি বরিশাল ঘাট ধরে বরগুনা যাওয়ার পথে রাত দু’টার দিকে আগুন ধরে যায়। এ সময় আর্তনাদ, হৈ-চৈ আর চিৎকারে অবর্ণনীয় এক পরিবেশ তৈরি হয় নদীতে থাকা লঞ্চটিতে এবং আগুন থেকে প্রাণ বাঁচাতে নারী, পুরুষ ও শিশুরা নদীতে ঝাঁপ দিতে থাকেন যাদের অনেকে এখনো নিখোঁজ আছেন।

জানা যায়, সুগন্ধা নদীতে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লেগে এখনও পর্যন্ত ন্তত ৪০ জন মারা গেছে। লঞ্চের ভেতরে এবং বাইরে ৩৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লঞ্চে আগুন লাগার পরে অনেক নদীতে লাফিয়ে পড়ে। ফলে নদী থেকে এখনো মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে।

এক পর্যায়ে ঝালকাঠির দিয়াকূল গ্রামে তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হলেও দ্রুত নামতে গিয়ে আটকে পড়া যাত্রীদের অনেকে আহত হন। কেউ কেউ শিশু সন্তান হারিয়ে এখনো খুঁজে পাননি।

একজন যাত্রী বলছেন, যখন মাঝরাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন একদিকে আগুন আর অন্যদিকে পানি – এ ছাড়া আর তো কোনো উপায় ছিলো না।

যাত্রীরা কয়েকজন জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই ইঞ্জিনের দিক থেকে মাঝে মধ্যেই জোরে শব্দ হচ্ছিলো আর প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিলো।

জহিরুল নামে এক যাত্রী সেই রাতের ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে বললেন, “আমরা অনেকেই বুঝতে পারছিলাম যে কোনো একটা ঝামেলা হচ্ছে। লঞ্চের ফ্লোরগুলোও গরম হয়ে উঠছিলো। ইঞ্জিনে প্রচণ্ড শব্দ হচ্ছিলো আর ব্যাপক কালো ধোঁয়া দেখছিলাম। স্টাফরা বলছিলো সমস্যা হবেনা।

এরপর আগুন লাগার পর নদীতে লাফ দেন এবং প্রায় এক ঘণ্টা ভাসার পর তীরে আসতে সক্ষম হন জহিরুল। আগুনে তার দুই পা পুড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর এক ইঞ্জিনে চলছিলো লঞ্চটি। পরে চাঁদপুর ছাড়ার পর দ্বিতীয় ইঞ্জিনটি চালু করা হয়।

“এরপর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ ব্যাপক চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে যায়। দরজা খুলে দেখি আগুন দেখা যাচ্ছে। স্টাফরা তখনো বলো ধৈর্য্য ধরেন। কিন্তু আগুনের উত্তাপ সইতে না পেরে দিলাম নদীতে ঝাঁপ”।

লঞ্চটির ভেতরের অবস্থা তখন কেমন ছিলো
যাত্রীরা বলছেন, লঞ্চটি বরিশাল ঘাট ধরে সুগন্ধা নদী হয়ে বরগুনা যাচ্ছিলো। হঠাৎই প্রচণ্ড শব্দ শোনা যায় এবং রাত দু’টার পর থেকে রাত তিনটার মধ্যে সম্পূর্ণ লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। এক পর্যায়ে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলেও গতির কারণে লঞ্চটি রানিং ছিলো বেশ কিছুটা সময়।

এ সময়ে বাতাসে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া যাত্রীবাহী সব লঞ্চের মতো এটিতেও যাত্রীদের প্রচুর পরিমাণ কাপড় আর ভেতরে ফ্লোরে কার্পেটের মতো থাকায় দ্রুতই আগুন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

তিন তলা লঞ্চটির নীচতলা পেছনের অংশে ছিলো ইঞ্জিন রুম। এরপর থেকে সামনের অংশ পর্যন্ত কিছু মালামাল আর অনেক যাত্রী ছিলো, যারা মূলত কার্পেটের ওপর কাপড় বিছিয়ে নিজেদের ঘুমানোর জায়গা করে নিয়েছিলেন।

নিজেদের কাপড়ের ব্যাগ থেকে শুরু করে লাগেজ বা বস্তা ছিলো অনেক যাত্রীর সাথে। কিন্তু ঠিক কতো যাত্রী ছিলো তার কোন তথ্য কারও কাছে নেই। লঞ্চটিতে আগাম টিকেট কাটার ব্যবস্থা ছিল না। দোতলার সামনের অংশে কেবিন আর বাকী অংশের পুরোটাই খোলা জায়গা যা ডেক হিসেবে পরিচিত। সেখানে অনেক পরিবারে নারী ও শিশু থাকায় কাপড় দিয়ে নিজেদের থাকার জায়গা ঘিরে দিয়েছিলো। আবার নীচতলা ও দোতলার ডেকের অংশে লঞ্চটির দু’পাশে পর্দা হিসেবে ত্রিপল দেয়া ছিলো।

বাবাকে পেয়েছেন, এখনও মাকে খুঁজছেন আমেনা

আমেনা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী তার বাবা মায়ের সঙ্গে দোতলায় ছিলেন। তিনি বলেন, “মনে হয় আজানের আগে হঠাৎ বাবা ঘুম থেকে ডেকে তুললো। বাবা-মাসহ তিন তলার ছাদের উঠে গেলাম। দেখি আগুন নেভেনা। একপর্যায়ে একেবারে কাছে চলে আসলো আগুন। তখন আমি লাফ দিলাম। পরে বাবাকে পেলেও মাকে এখনো পাইনি,”

মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নামে আরেকজন যাত্রী বলছেন, মধ্যরাতে ২/৩ টা শব্দ শুনতে পান তারা। এরপর নীচে সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেন আগুন, আবার উপরে রওনা দিয়ে দেখেন সেখানেও আগুন দেখা যাচ্ছে। “চারদিকে কাপড় লাগানো। এক পর্যায়ে কাপড় বেয়ে নীচে নেমে লঞ্চের সামনের দিকে চলে যাই। দেখি যাত্রীতে ভরপুর। তার উল্টো দিকে দেখি তীর দেখা যায়। সব খুলে প্যান্ট পড়ে ঝাঁপ দেই পানিতে। দু ‘মিনিট পরে নদীর পাড় পেয়ে যাই,”।

নদীতে অনেক নারী পুরুষকে সাঁতরানোর চেষ্টা করতে দেখেছেন তিনি। তীরে পৌঁছার পর নিজের জামা দিয়ে আরেকটা মেয়েকে সহায়তা করেছেন এই যাত্রী।

আর্তনাদ, হৈ-চৈ
আমেনা আক্তার বলছেন, ঘুম ভেঙ্গেই তিনি সবদিক থেকে চিৎকার আর আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছিলেন। এরপর তিন তলার ছাদ থেকে যখন লাফ দেন তখন বাবা মায়ের দিকে তাকাবার মতো হুঁশ তার ছিলো না। আমেনা বলেন, “কখন যে সবাইকে ছেড়ে লাফ দিলাম বুঝতেই পারিনি।” তবে নীচতলা ও দোতলার ডেকের যাত্রীরা আগুন আগে টের পেলেও কেবিনের যাত্রীরা টের পেয়েছেন পরে। মূলত হৈ-চৈ শুনে তাদের অনেকের ঘুম ভাঙ্গে। অনেকে ধোঁয়ায় দমবন্ধ অবস্থায় পড়েন কেবিনের মধ্যে।

তিনতলার একটি কেবিনে ছিলেন জহিরুল এবং শব্দ শুনে দরজা খুলে আগুন দেখে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। চারদিক থেকে চিৎকারের শব্দ আসছিলো। পরে নদীতে লাফ দেন এবং এক ঘণ্টা পর তীরে আসতে সক্ষম হন। এসব যাত্রীরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

তথ্য সূত্র: বিবিসি বাংলা

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Tagesordnungspunkt Spielbank Maklercourtage Ohne Einzahlung 2024

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD