অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিরোধীমত দেখা দিলেই জুলুম নির্যাতন ছাড়াও বিভিন্নভাবে বশে আনার চেষ্টা করেন ক্ষমতাসীনরা। তার প্রমাণ ইতিপূর্বে কয়েকবার মিলেছে।
২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামী যখন সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেমেছিলো। এরপর জুলুম নির্যাতনে যখন দমন সম্ভব হয়নি তখনই বিভিন্নভাবে বস করার চেষ্টা করে। কওমী মাদ্রাসার ডিগ্রির লোভ দেখিয়ে তাদেরকে দমিয়ে দেয়।
এরপর ২০১৮ এর নির্বাচনের যখন বিএনপি জামায়াত অংশ নিতে রাজি হয়নি ঠিক তখন ড. কামাল ও জাফরুল্লাহ চৌধুরীরকে দিয়ে কথিত ঐক্যফ্রন্ট করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করে। এবার ভিপি নুরকে দমিয়ে রাখতে একই কৌশল ব্যবহার করছেন ক্ষমতাসীনরা।
বিভিন্ন সময় জুলুম নির্যাতনে শিকার হয়েও যখন থেমে থাকেনি তখন কথিত সেই কথিত বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে কাজে লাগাচ্ছে সরকার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিপি নুরকে বিগত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে পরমর্শ দিয়ে আসছে এই জাফরুল্লাহ। তার পরমর্শ গ্রহনও করছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে ভিপি নুরের পাশে থাকার কথা দিয়েছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো এটাই কি আসল সত্য নাকি পর্দাল আড়াল ভিপি নুরকে বশে আনার চেষ্টা চলছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বড় হয়েছেন ভারতীয় ও আওয়ামী চিন্তা চেতনা লালন করে। ইসলাম ও বিএনপির জাতীয়তাবাদকে তিনি কখনো পছন্দ করতেন না এবং এখনো করেননি। আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তিনি জাতীয়তবাদের মুখোশ পরে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
দেখা গেছে, কথিত দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই সুযোগটা বেশি কাজে লাগিয়েছেন। শেখ হাসিনার টার্গেট ছিল খালেদা জিয়াকে জেলে ভরে একতরফা নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসা। এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখানোর জন্য বিএনপিকেও নির্বাচনে নিয়ে আসা। আর সেই টার্গেট বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনা দায়িত্ব দিয়েছিলেন ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাহকে।
আর হাসিনার সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই কথিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাহ। ছলে বলে কৌশলে সেই ফ্রন্টে নিয়ে গেলেন বিএনপি। এমনকি বিএনপি শুধু ফ্রন্টেই যোগ দেয়নি, কামাল-জাফরুল্লাহর ফাদে পা দিয়ে হাসিনার পাতানো নির্বাচনেও অংশ নেয।
এর পরের ইতিহাস সবার জানান। এত বড় ভোট ডাকাতির পরও বিএনপি একটা প্রতিবাদ বিক্ষোভও করতে পারেনি। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিএনপির মাজা এভাবেই ভেঙ্গে দিয়েছে যে, দলটি এখন আন্দোলন করবেতো দূরের কথা সোজা হয়ে দাড়াতেও পারছে না।
এখন আবার সেই ভারতের এজেন্ট ও হাসিনার দালাল ডা. জাফরুল্লাহর ফাদে পা দিয়েছেন ভিপি নুর। সবগুলো সভা-সমাবেশেই এখন ডা. জাফরুল্লাহকে পাশে রাখেন ভিপি নুর। এমনকি মাঝে মধ্যে জাফরুল্লাহর কাছ থেকে অনুদান নিয়ে ভিপি নুরের ছাত্র পরিষদের লোকজন মানুষের মধ্যে শীতের কাপড়ও বিতরণ করছে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো-যেদিন থেকে ডা. জাফরুল্লাহর পেছনে ভিপি নুর ঘুরছে, সেদিন থেকেই রাজপথে তার ছাত্র অধিকার পরিষদের আন্দোলনের গতি কমে আসছে। নুরসহ তার সহযোগীদের উপর সরকারি দলের লোকেরা হামলা চালালেও এর বিরুদ্ধে শক্ত কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না ভিপি নুর।
সচেতন মহল মনে করছেন, ভিপি নুর যদি ডা. জাফরুল্লাহর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করে তাহলে বিএনপির অবস্থা হবে। ডা. জাফরুল্লাহ মির্জা ফখরুলদের মতো ভিপি নুরকেও বশে আনতে চেষ্টা করছেন। ভিপি নুর যদি এভাবে তাদের কথায় চলতে থাকে তাহলে কোনঠাসা হয়ে যাবেন।