অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে একটি কলংকিত ও কালো অধ্যায়ের নাম হলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ওদের ইতিহাসে খুন-হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মানুষের জমিদখল, মাদক ব্যবসা, ভর্তি জালিয়াতি, হল দখল, প্রশ্নপত্র ফাঁস, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি ছাড়া ভাল কিছু খোঁজে পাওয়া যায় না।
জন্মের পর থেকেই এই ছাত্রলীগ দেশে কুকর্ম করে আসছে। শেখ মুজিবের আমলেই তাদের নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে মানুষ রেহায় পায়নি। শেখ মুজিব নিজেও শত চেষ্টা করে ওদেরকে অপরাধ-অপকর্ম থেকে বিরত রাখতে পারেননি।
একদিন সকালে পত্রিকা পড়ে শেখ মুজিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে বললেন-গতকাল দেশে হঠাৎ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল হয়ে গেল? কারণ কি? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানালেন-গতকাল ঢাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের জাতীয় সম্মেলন ছিল।
ছাত্রলীগ তাদের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় একদিন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল ছিল। এটা থেকেই ছাত্রলীগের অপকর্মের বিষয়ে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।
তারপর, সাম্প্রতিক কয়েক বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়-বাংলাদেশে এমন কোনো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা ছাত্রীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে না। জাহাঙ্গীরনগরের ধর্ষণের সেঞ্চুরি তো সবারই জানা।
আর গত এক মাসের হিসাবে দেখা গেছে, সারাদেশে কমপক্ষে ১৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা।
আর সর্বশেষ সিলেট এমসি কলেজে যা ঘটেছে এটা নিয়েতো এখন সারাদেশে তোলপাড় চলছে। এমনকি ছাত্রলীগ নিজেও এখন ইমেজ রক্ষায় ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে মিছিল করছে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো- এত কিছুর পরও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য রোববার বলেছেন, নারীদের প্রতি খারাপ চোখে তাকানোর মতো কোনো কর্মী নাকি ছাত্রলীগে নেই। তিনি আর বলেছেন, এমসি কলেজের হোস্টেলে যারা ওই নারীকে ধর্ষণ করেছে তারা কেউ নাকি ছাত্রলীগের নয়।
নারী নির্যাতন আর নারী ধর্ষণ যাদের পেশা ও নেশা, তারা নাকি খারাপ চোখে নারীদের দিকে তাকায়ও না। এর চেয়ে চরম মিথ্যাচার আর হতে পারে?
ছাত্রলীগ সেক্রেটারির এই বক্তব্য নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চরম হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। যে যেভাবে পারে সেই ভাবেই তাকে গালিগালাজ করছে। কেউ কেউ তাকে ধর্ষক নেতা হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছে।