অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনার ধাক্কা লেগেছে এবার সরকারের মন্ত্রীপাড়ায়। ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। নাসিম আর ফিরে আসতে পারবে কি না এ নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
এছাড়া ইতিমধ্যে একাধিক সংসদ সদস্য পরিবারসহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
কিছু দিন ধরেই গুঞ্জন উঠেছে যে, সরকারের একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাসহ গণভবনের কয়েকজন কর্মকর্তাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এসব খবর গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে না। আক্রান্তরা অতি গোপনে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আর এসব খবরের কিছু সত্যতাও পাওয়া যাচ্ছে। যেমন-স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গোপনে চিকিৎসা নিয়েছেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি নিজেই গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন।
তারপর, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী মোজাম্মেল হক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এটা আগেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু সরকার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেনি। মন্ত্রীর স্ত্রী ও তার একান্ত সচিব আক্রান্ত হওয়ায় এখন আর গোপন রাখতে পারছে না। জানা গেছে, সরকারের ইশারাতেই শুক্রবার মন্ত্রী নিজেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর গণমাধ্যমকে জানান।
এরপর, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন খবরও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর কিছু দিন ধরে প্রকাশ্যে না আসায় জনমনেও এনিয়ে সন্দেহ সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, আইনমন্ত্রী আক্রান্ত হয়ে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এছাড়া, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের পিএসও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের সব মন্ত্রী-এমপিরাই এখন করোনায় আতঙ্কে ভুগছেন। অনিচ্ছা সত্বেও তারা মন্ত্রণালয়ের কাজে বাইরে বের হচ্ছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকেও তাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের রণজিত কুমার রায়ের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ জুন। পরে তাকে যশোর সিএমএইচে নেয়া হয়। চট্টগ্রাম-৮ আসনের এমপি মোসলেম উদ্দিনের করোনার পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায় ১০ জুন। তার সঙ্গে পজেটিভ রিপোর্ট আসে স্ত্রী, ছেলে, নাতিসহ পরিবারের আরও ১০ সদস্যের। তাদের সবারই চিকিৎসা চলছে। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের এমপি মো. মোস্তাফিজুর রহমানও সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত। ২ জুন ওই এমপিসহ তার পরিবারের মোট ১১ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তারা চট্টগ্রাম শহরের নাসিরাবাদ রহমান নগর এলাকার বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এছাড়া ৩ জুন জামালপুর-২ আসনের এমপি ফরিদুল হক খান দুলাল, তার আগে চট্টগ্রাম-৬ আসনের এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, ১৯ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের এমপি মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল ও ১ মে নওগাঁ-২ আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের করোনা সংক্রমণের তথ্য জানা যায়। এর মধ্যে শহীদুজ্জামান সরকার ও এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী করোনাকে জয় করেছেন। এদিকে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় (শেখ তন্ময়) আইসোলেশনে রয়েছেন। তার ব্যক্তিগত সহকারীর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে আইসোলেশনে গেছেন তিনি।