অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিনাভোটে ক্ষমতায় আশার শুরু থেকেই দেশে দুর্নীতি বন্ধের ঘোষণা দিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ভাষায়-বিগত দিনে দেশে যত দুর্নীতি, লুটপাট, রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাত হয়েছে সবই করেছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। হাসিনা ও তার দলের নেতা বিগত ১১ বছর ধরে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে আসছে যে, বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। যদিও এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা আজ পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারেনি শেখ হাসিনার সরকার।
শেখ হাসিনা এবং তার দলের নেতারা বিএনপি-জামায়াতকে দুর্নীতিবাজ বললে বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেখা গেছে তার দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভোট ডাকাতি থেকে শুরু করে গরিবের চাল পর্যন্ত লুট পুটে খেয়েছে। এছাড়া এসব সব কিছুকে ছাপিয়ে এখন সমালোচনায় মানবপাচার, অর্থপাচার ও সাধারণ মানুষের স্বপ্ন নিয়ে প্রতারণা। দেখা গেছে দেশ থেকে এখন বিশ্বসভায়ও হাসিনার ইজ্জত খোয়ায়ে দিলেন পাপুল।
গত কয়েকদিন আগে মানবপাচার, অর্থপাচার ও প্রতারণার দায়ে লক্ষ্মীপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতার করেছে কুয়েত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমপি পাপুলের নানা অপকর্মের তথ্য প্রমাণ পেয়েছে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ। কুয়েতের অন্যতম প্রভাবশালী দৈনিক আরব টাইমস মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গ্রেফতার বাংলাদেশি আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে শুধু অর্থ ও মানব পাচার নয়, তার প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে বিপুলসংখ্যক কর্মীর সঙ্গে প্রতারণার তদন্তও চলছে।
বাংলাদেশিদের কুয়েতে ভালো চাকরি দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার কুয়েতি দিনার (ছয় লাখ ৯০ থেকে আট লাখ ২৮ হাজার টাকা) নিয়েছেন এমপি পাপুল। নিয়ে যাওয়ার পর তাদের স্থায়ী চাকরি দেওয়া হয়নি।
এদিকে কুয়েতের আরবি দৈনিক আল রাই জানিয়েছে, পাপুলের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে পাচারের তথ্যও এসেছে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। এ কারণেই নিবিড় তদন্তের স্বার্থে পাপুলকে আটক রাখার ব্যাপারে অবস্থান নিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।
কিন্তু আশ্চর্য্যরে বিষয় হলো-এমপি পাপুলের ঘটনায় যখন সারাদেশে তোলপাড় চলছে, তখন শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা মুখে কুলুপ দিয়ে চুপ হয়ে গেছেন। একজন এমপি বিদেশে গ্রেফতার হওয়ার পরও তারা কিছুই বলছে না।
শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাদের নিরবতাকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ। তারা বলছেন, পাপুলের অর্থপাচার ও মানবপাচারের সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকজন জড়িত আছেন। পাপুলের মাধ্যমে তারাও বিদেশে টাকা পাচার করেছে। যার কারণে এখন পাপুলের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছে না।