অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে করোনা আক্রমণের পর থেকে ক্ষমতাসীনরা বিভিন্ন ভাবে তথ্য গোপন করার চেষ্টা করে করছে। বিশ্বব্যপী যখন প্রাণঘাতী করোনা ছড়িয়ে পড়ছিলো ঠিক তখন বাংলাদেশে মুজিববর্ষ পালনের নামে কুজকাওয়াজ চলছিলো। সরকার প্রধানরা শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের জন্মদিন পালনে ব্যস্ত থাকায় করোনা প্রতিরোধের কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেনি। তাই সরকারি ব্যর্থতা ঢাকতে ও আন্তর্জাতিক মহলে নিজেরদের প্রশসংসা পেতে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা গোপন করে চলছে ক্ষমতাসীনরা।
গত রবিবার ‘করোনা প্রস্তুতি শূন্যের কোটায়, চাপা দিতে তথ্য গোপন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যানালাইসিসি বিডি। সেখানে বলা হয়, সরকার নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য গোপন করছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর অনেকেই সরকারের বিরুদ্ধে গুজব বলে সমালোচনা করেন। আবার অনেকেই ক্ষমতাসীনদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে। এমনকি দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনীতিক বিশ্লেষক এবং সিনিয়র সাংবাদিকরাও করোনায় আক্রান্তদের সরকারি হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও করোনা নিয়ে সরকারের মিথ্যাচারের কঠর সমালোচনা করেন সাধারণ মহল।
এছাড়া ওই প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয় বহির্বিশ্বে কৃতিত্ব নিতে ডেঙ্গুর মতো করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা চাপা দেওয়া হচ্ছে। এই কথারও সত্যতা পাওয়া গেল সোমবার খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের বক্তব্য থেকেই।
সোমবার ভিডিও বার্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যা ও জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে কঠর সমালোচনা করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কম থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ প্রশংসা রেছে। ক্ষমতাসীনরা এই প্রশংসা পেতেই তথ্য চাপা দিয়ে জনগণকে ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সামনের দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক লোক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। আর প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে ৫ জন। সরকারের কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করছে না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী গত ১৭ই মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজনৈতিক মহল বলছেন, মূলত বহির্বিশ্বের প্রশংসা পেতে করোনার তথ্য গোপন করছে শেখ হাসিনা। দেশের মানুষকে হুমকির মুখে রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ থেকে প্রশংসা পেতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশের মানুষকে মেরে নবেল পাওয়া স্বপ্ন দেখছেন। তারা বলছেন, বর্তমান দেশের যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে সরকার সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে এভাবে যদি তথ্য গোপন করতে থাকে তাহলে সংক্রমনের সংখ্যা আরও বহুগুনে বেড়ে যাবে। তাই দেশের এই ক্রান্তিকালে প্রকৃত তথ্য জানানোর পাশাপাশি দেশকে লকডাউনের আওতায় নিয়েে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ঘোষণা করার আহবান জানিয়েছেন তারা।