অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কথিত দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন ও মুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের শীতল রাজনীতির মাঠ কিছুটা উত্তপ্ত হয়েছে। অনুমতি ছাড়া বিএনপির রাস্তায় নামার শক্তি, সাহস ও সক্ষমতা নেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের একদিন পরই পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। শুধু বিক্ষোভ নয়, হাইকোর্টের সামনে তারা অবস্থানও করেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বিএনপির এই বিক্ষোভের পর থেকে দেশের শীতল রাজনীতিতে উত্তাপের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যেও। এরপর থেকে প্রতিটি কর্মসূচিতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতি আগের চেয়ে অনেক বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অপরদিকে, কাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে হঠাৎ বিএনপির বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে টনক নড়েছে আওয়মাী লীগ নেতাদেরও। দীর্ঘদিন ধরেই তারা বলে আসছে-মাঠে নামার মুরোদ বিএনপির নেই। বিএনিপর মরা গাঙ্গে আর কখনো জোয়ার আসবে না। কিন্তু বিএনপির সেদিনের বিক্ষোভ সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে। তারা এখন বিএনপিকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন-বিএনপি মাঠে নামলে সমুচীত জবাব দেয়া হবে। বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদেরকে প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন কাদের। আর দলটির নেতা মো. নাসিম বলেছেন, বিএনপি মাঠে নামলে আওয়ামী লীগ সারাদেশে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকির জবাবে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ওবায়দুল কাদেরকে পুলিশ ছাড়া রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন।
বড় দুই দলের নেতাদের পাল্টাপা্ল্টি হুমকিতে দেশের রাজনীতিতে হালকা উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে।
এখন রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষের মুখে শুধু একটি প্রশ্ন-ওবায়দুল কাদের আর নাসিম কি বিএনপির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে? আর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেও আওয়ামী লীগ কি পুলিশ ছাড়া মাঠে নামতে পারবে?
তবে, বিগত ১১ বছরের শাসনামল বিশ্লেষণ করলেও এটাই পরিষ্কার হয় যে, বর্তমানে পুলিশ ছাড়া মাঠে নেমে বিরোধীদলকে মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা আওয়ামী লীগের নেই। কারণ, সরকার এখন জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ভোটডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ এখন পাুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সুতরায় পুলিশ ছাড়া এখন মাঠে নামার সাহস পাবে না আওয়ামী লীগ।
তারপর, খুন, হত্যা, গুম, অপহরণ, দুর্নীতি, লুটপাট, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মানুষের বাড়িঘর ও জমি দখল, মাদক ও ইয়াবা ব্যবসা, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, দ্রব্যমূল্যের চড়া দাম, বিশেষ করে বায়ুবীয় উন্নয়নের নামে সারাদেশে শত শত প্রকল্প খুলে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় দেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগের ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ। শেখ হাসিনার কখন পতন হবে মানুষ এখন সেটার জন্য অপেক্ষা করছে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন-আওয়ামী লীগ নেতারা হুমকি-ধামকি দিলেও পুলিশ ছাড়া মাঠে নামার সাহস তাদের নেই। মাঠে নামবে তো দূরের থাক, পুলিশ সরে গেলে আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে যাওয়ার পথ পবে না।