অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রবীণ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত প্রায় সময়ই বলতেন-আমেরিকার মতো বন্ধু থাকলে আর কারো শত্রুর দরকার নাই। সেন বাবু আজীবন বাংলাদেশে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন। এজন্য ভারতের স্বার্থ বিরোধী কোনো কথা তিনি বলেন নি। তবে, আমেরিকা নিয়ে তার পেএই উক্তিটি ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বাংলাদেশের জনগণ মনে করে-ভারতের মতো বন্ধু দেশ যাদের আছে তাদের আর কোনো শুত্রুর দরকার নেই। সব কিছু শেষ করে দেয়ার জন্য সর্বগ্রাসী এই বন্ধুই যথেষ্ট।
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, ভারত বাংলাদেশের একমাত্র পরীক্ষিত বন্ধু। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আকাশ ছোয়া।
কিন্তু, রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ মনে করে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাদের এসব দাবি শুধু আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আওয়ামী লীগের কাছে ভারত সত্যিই পরীক্ষিত বন্ধু। কারণ, ভারতের বন্ধু থাকার কারণেই শেখ হাসিনা বার বার বিনাভোটে ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছে। আর ভারতের সাথে আকাশ ছোয়া সম্পর্ক থাকলেও আওয়ামী লীগের আছে। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ভারত আজ পর্যন্ত কিছুই করেনি। যা করেছে সবই তাদের অনুগত শেখ হাসিনার জন্য করেছে।
অতীতের দিকে তাকালে দেখা যায়-স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারত যা করেছে সবই করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্বার্থে। ছলেবলে কৌশলে ভারত বাংলাদেশ থেকে অনেক সুবিধা নিয়েছে, কিন্তু বদলতে দেয়নি কিছুই। দিয়েছে শুধু সীমান্তে লাশ। আর বাংলাদেশের যুবক, তরুণ ও কিশোরদের চরিত্র ধ্বংস করার জন্য পাচার করছে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও ফেনসিডিল। বাংলাদেশের জনগণের প্রয়োজনীয় কিছুই দেয়নি। এর বাস্তব প্রমাণ গত দুই দিনের ঘটনা।
ভারতের নদীগুলোতে এবার ইলিশ মাছের উৎপাদন হয়নি। এজন্য তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাতে এবার তারা ইলিশ খেতে পারবে না। বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ ব্যবস্থায় ভারতে ৫০০ টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বেনাপোল বন্দর দিয়ে সোমবার ইলিশের প্রথম চালান ভারতে পৌঁছেছে।
এই ইলিশ পেয়ে মোদি কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন? খুবই ভাল প্রতিক্রিয়া। হঠাৎ করেই বন্ধ করে দিলেন পেঁয়াজ রপ্তানি। বন্ধু তো দূরের কথা, কোনো পরীক্ষিত শুত্রুও এমন কাজ করে না। মোদির এমন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের মানুষ শুধু হতাশ হয়নি, প্রচন্ড ক্ষুব্ধও হয়েছে।
এরপর শুধু পেঁয়াজ বন্ধ করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি মোদি, হঠাৎ করেই ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। এর ফলে উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে বড় ধরণের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজশাহীতে পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
নরেন্দ্র মোদির এমন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের মানুষ শুধু ক্ষুব্ধ হয়নি, উত্তরাঞ্চের মানুষ ক্ষোভে ফুসে উঠছে।
সচেতন মহল বলছেন, ভারত সব সময়ই বন্ধু সেজে শুত্রুর চেয়েও আরও বেশি খারাপ আচরণ করে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যদি মোদির ন্যূনতম শ্রদ্ধা ও ভালবাসা থাকতো তাহলে এমন কাজ করতে পারে না। তাদের সম্পর্ক হলো অনুগত দাস শেখ হাসিনা ও তার দলের প্রতি। ভারত একট্ আগ্রাসী দেশ। তারা কখনো প্রতিবেশি দেশের কল্যাণ চায় না। তার চায় শুধু ধ্বংস। এজন্যই বাংলাদেশের মানুষকে পানিতে চুপিয়ে মারতে ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দিয়েছে।