অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
অন্যান্য বারের মতো এবারও রাজধানীর কুরবানির পশুর হাটগুলোতে ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। রাজধানী ঢাকাতে এবার ২৪টি স্থানে কুরবানির পশুর হাট বসেছিল। প্রতিটি হাট থেকেই কয়েক কোটি টাকা করে চাঁদা তুলেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। এমনকি চাঁদার এই বন্টন নিয়ে একজন এমপির বাসায় হট্টগোলও হয়েছে।
ঈদের আগের রাত পশুর দাম কম থাকলেও প্রথম দিকে এবার পশুর দাম ছিল অনেক। পছন্দের পশু কেনা তখন অনেকেরই সাধ্যের বাইরে ছিল। গরুর এই চড়া মূল্যের পেছনে মূল কারণ ছিল ক্ষমতাসীনদের চাঁদাবাজি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরু বিক্রির পর হাসিলের টাকা ছাড়াও ইজারাদারদেকে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়েছে পাইকারদের। আর যারা হাটের ইজারা নিয়েছিল তাদেরকে প্রথমেই মোটা অংকের চাঁদার কোটা ধার্য করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। আর চাঁদার এই কোটা ছিল মাঠ অনুযায়ী। জানা গেছে, ছোট হাটগুলোর জন্য সর্বনিম্ন কোটা ছিল ২ কোটি টাকা। এভাবে রাজধানীর ২৪টি গরুর হাট থেকে তারা প্রায় শত কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বাড্ডার আফতাবনগর ও রামপুরার মেরাদিয়া গরুর হাট থেকে ২ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রহমত উল্লাহ। ঈদের পরের দিন অর্থাৎ গত বুধবার দুপুরে এমপি রহমত উল্লাহর গুলশানের বাসায় স্থানীয় আ.লীগ নেতাদেরকে ডেকে চাঁদার টাকা দিয়েছেন রহমত উল্লাহ।
ঢাকা সিটির ৪টি ওয়ার্ড নিয়ে রহমত উল্লাহর নির্বাচনী এলাকা গঠিত। রহমত উল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানিয়েছে, ওই দিন ৪টি ওয়ার্ডে তিনি ২ লাখ করে ৮ লাখ টাকা দিয়েছেন। আর বাড্ডা, রামপুরা ও বেরাইদের সভাপতি-সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রত্যেককে আলাদা টাকা দিয়েছেন। প্রতি ওয়ার্ডের সাধারণ নেতাকর্মীদেরকে মাত্র ২ লাখ করে টাকা দেয়ায় রহমত উল্লাহর বাসাতেই এনিয়ে বাকবিত-া শুরু করেন কয়েকজন। টাকার ভাগ নিয়ে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়।
তাদের অভিযোগ, এমপি আরও বেশি টাকা চাঁদা নিয়েছে। আমাদের সামনে মাত্র ২ কোটি টাকার কথা স্বীকার করেছে। এরপর মাঠগুলোতে আমরা সার্বক্ষণিক পরিশ্রম করেছি, কিন্তু টাকার ভাগ আমাদেরকে কম দেয়া হয়েছে।
কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর প্রতিটি হাট থেকে আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি করেছে। বিশেষ করে গাবতলী ও পোস্তগোলাসহ বড় বড় হাটগুলো থেকেই তারা শত কোটি টাকা নিয়েছেন। এসব টাকার ভাগ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পকেটেও গেছে।