অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বৈঠকে উপস্থিত শরিক দলের নেতাদের মোবাইল জমা নেয়ার ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন ২০ দলীয় জোটের কয়েকজন শীর্ষনেতা। বৈঠকের নাম করে গুলশানে এনে মির্জা ফখরুল তাদেরকে চরমভাবে অপমান করেছেন বলেও অভিযোগ তাদের। বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে।
গত সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলের শীর্ষনেতাদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই বৈঠক শুরুর আগেই উপস্থিত শরিক দলের নেতাদের মোবাইল জমা নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কী কারণে মোবাইল জমা নেন তখন ওই বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি মির্জা ফখরুল।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের অতিগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো বৈঠকের পর পরই সরকারের কাছে চলে যায়। দেখা গেছে, বিগত দিনে সরকার বিরোধী অনেক আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জেনে গেছে। এনিয়ে খালেদা জিয়া একাধিকবার স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের সিনিয়র নেতাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অতি গোপনীয়ভাবে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো সরকারের কাছে চলে যাওয়ার কারণেই মূলত বিগত দিনে বিএনপি-জামায়াতের সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলন সফল হয়নি।
খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পরও বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ফাঁস হয়ে যাওয়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে।
গত সপ্তাহে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের ৫ এমপির সংসদে যাওয়া নিয়ে অনেক তর্কবিতর্ক হয়েছে। জানা গেছে, মির্জা ফখরুলের সঙ্গে কয়েক নেতার চরম বাকবিতান্ডও হয়েছে। এসব খবর বাইরে আসার কথা না থাকলেও পরের দিন গণমাধ্যমে সবই এসেছে। এনিয়ে পরের বৈঠকে আবার মির্জা ফখরুল স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো-দলের যেসব নেতা রুদ্ধদ্বার বৈঠকের খবর সরকারের কাছে কিংবা গণমাধ্যমের কাছে ফাঁস করে দেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়ে মির্জা ফখরুল মোবাইল জব্দ করলেন ২০ দলীয় জোটের নেতাদের। যার কারণে ২০ দলের শরিকরা বিষয়টিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শরিকদলের একজন নেতা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই জোটে আছে। খালেদা জিয়া কখনো আমাদের সঙ্গে এমন অপমানজনক ব্যবহার করেননি। মির্জা ফখরুল বৈঠকে আমাদের মোবাইল নিয়ে শরিকদলের নেতাদেরকে চরমভাবে অপমান করেছেন। তাদের কারণেই খালেদা জিয়া এখনো কারাগারে বন্দি আছেন। ফখরুলের এই আচরণ মেনে নেয়া যায় না।
আরেকটি দলের একজন শীর্ষনেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই মির্জা ফখরুল ২০ দলীয় জোটকে ভাঙতে চাচ্ছেন। সেদিন বৈঠকে মোবাইল জমা নেয়ার মাধ্যমে ফখরুল যেটা করেছেন সেটা কোন ভাবেই উচিৎ হয়নি।