অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় একের পর এক নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডে শুধু স্থানীয় ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, মাদরাসা কমিটি, থানার ওসি এবং জেলার এডিএম জড়িত নন, জাতির বিবেক নামে খ্যাত সেই সাংবাদিকদের সংশ্লিষ্টতাও বেরিয়ে আসছে।
নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পর একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ছিল যে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রী। ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে ফেনীর স্থানীয় কিছু অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এমন নিউজও করেছিল। আর নুসরাত মাদরাসার ছাদে উঠে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এমন গুজবটি প্রথম ছড়িয়ে দিয়েছিল দৈনিক সমকাল পত্রিকার সোনাগাজী উপজেলা প্রতিনিধি আবুল হোসেন রিপন।
মূলত হত্যাকাণ্ডটিকে ধামাচাপা দিতেই সাংবাদিক রিপন পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করেছিলেন। ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই আবুল হোসেন রিপনের ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়। তাতে লেখা হয়- সোনাগাজীতে শরীরে পেট্রল ঢেলে মাদরাসা ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা। মাদ্রাসার চাদে উঠে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সোনাগাজী ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার নুসরাত জাহান রাফি নামে এক ছাত্রী। সকাল ১০ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এই পোস্টটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনা নিয়ে তৈরি করা হয় বিভ্রান্তি। ১১ তারিখে রাফি মারা যাওয়ার পরে আবুল হোসেন গা-ঢাকা দেয়, এবং তার ফেসবুক আইডি ডিজেবল করে রাখে।
অপরদিকে, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলার মুক্তির জন্য মানববন্ধন করেছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। আর সাংবাদিক আবুল হোসেন রিপন তার রিপোর্টে শিবির কর্মীরা মানববন্ধন করেছিল বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত আবুল হোসেন রিপন তার আরেকটি নিউজে উল্লেখ করেছেন- নুসরাতের বান্ধবী নিশাত বলেছেন- নুসরাতকে কেউ মারধর করেনি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এছাড়া, সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম যে বলেছিলেন- নুসরাত আত্মহত্যা করেছে সেটাও প্রথম প্রচার করেছিল সাংবাদিক রিপন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসি মোয়াজ্জেম থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে সাংবাদিক রিপন নুসরাত হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে পত্রিকায় নিউজ ও তার ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, সাংবাদিক রিপনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই হত্যাকাণ্ডের আরও রহস্য বেরিয়ে আসতে পারে। রিপনের এসব কর্মকাণ্ডে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ সোনাগাজীর মানুষ। রিপনকেও তারা গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।