পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাল্টা হামলায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি জঙ্গি বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। বুধবার দুই দেশের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এই হামলা চালিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। এক দিন আগে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলার জবাব দিতেই এই হামলা জানানো হয়েছে বলে পাকিস্তান দাবি করেছে।
ডন পত্রিকায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, এই হামলার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার, ইচ্ছা আর সামর্থ্য প্রমাণ করা।
পাকিস্তান আইএসপিআরের ডিজি মেজর জেনারেল আসিফ গফুর হামলার কথা নিশ্চিত করে বলেন, পাকিস্তান বিমানবাহিনী এই হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান বিমানবাহিনী পাকিস্তানি আকাশসীমার ভেতরে দুটি ভারতীয় বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। একটি বিমান আজাদ কাশ্মিরের ভেতরে পড়ে, অপরটি নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে ভারত-অধিকৃত কাশ্মিরে ভূপাতিত হয়। ভারতীয় বিমানের একজন পাইলটকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান অ-সামরিক টার্গেটে আঘাত হেনেছে, মানুষ হতাহত এড়িয়ে গেছে। অথচ ভারত নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে চলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত তথাকথিত সন্ত্রাসী ব্যাঙ্কারে হামলা চালানোর কথা বলছে কোনো প্রমাণ না দিয়েই। আমরা প্রতিশোধ নিতে পারি। তবে আমরা ভারতকে শঅন্তির সুযোগ দিতে চাই।
গত মঙ্গলবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে যেকোনো পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। আমরা সবাই প্রস্তুত। এখন জবাবের জন্য ভারতের প্রস্তুত থাকার সময়।
ভারতীয় হামলা প্রতিহত করা হয়েছে : জেনারেল গফুর
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর এক টুইটে বলেছেন, আজাদ কাশ্মিরে ভারতীয় হামলা প্রতিহত করেছে ইসলামাবাদ। ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটের কাছে বোমা বর্ষণ করে। জবাবে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী তাদের ধাওয়া করে হটিয়ে দেয়।
সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ ইমরানের : ভারতের বিমান হামলার পর সম্ভাব্য সব ধরনের পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে সেনাবাহিনী ও দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জরুরি বৈঠক করেন ইমরান খান। বৈঠকে আজাদ কাশ্মিরে ভারতীয় হামলাকে চূড়ান্ত আগ্রাসন বলে মন্তব্য করা হয়। পরে ইমরান খান বলেন, সঠিক সময়ে এবং সঠিক জায়গায় উপযুক্ত জবাব দেবে পাকিস্তান।
বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে ইমরান খান সশস্ত্রবাহিনী ও দেশের মানুষকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন, এ অঞ্চলে ‘ভারতের দায়িত্বহীন নীতি’কে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির ওই বৈঠক হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থমন্ত্রী, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বালাকোটের কাছে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে হামলার যে দাবি ভারত করছে, তা কড়াভাবে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। একই সাথে যে ক্ষয়ক্ষতির দাবি করছে তা-ও প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।