অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
একাদশ সংসদ নির্বাচনে নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। জনগণ ভোট দিতে না পারায় নতুন সরকারের প্রতি তাদের কোনো সমর্থন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বলা যায়- বর্তমান সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। র্যাব-পুলিশ আর বিজিবির সেল্টারে এখন দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক কোনো পর্যবেক্ষক সংস্থা আসেনি। সার্ক মানবাধিকার সংস্থা নামে ভুয়া একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা সরকারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষন করেছিল। নির্বাচনের পরের দিন ৩১ ডিসেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময়ে কথিত এই পর্যবেক্ষক সংস্থাটি দাবি করেছিল নির্বাচন খুব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। আর তাদের দেয়া এই বক্তব্যকে পুজি করে নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করছে।
তবে টাকায় কেনা কথিত এই সংস্থাটিই এখন বলছে যে, তাদের পর্যবেক্ষণ সটিক ছিল না। নির্বাচন নিয়ে তারা যে তথ্য দিয়েছিল সেটা ভুল ছিল। আসলে রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রাখা হয়েছিল। তারা আসলে সব জায়গায় পর্যবেক্ষণ করতে পারেনি।
এখন, এই সংস্থাটিও মত পাল্টানোর পর সরকারের দাবির পক্ষে কথা বলার আর কেউ থাকলো না।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো-দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও দেশের সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে এক সুরে গান গেয়ে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো প্রতিদিনই জনগণ তাদেরকে বিপুলভোটে বিজয়ী করেছে বলে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। এত বড় ভোট ডাকাতির পরও জনগণের ভোটে নাকি তারা বিজয়ী হয়েছেন এই বলে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে গত শুক্রবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে।
নির্বাচনের পর জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে শেখ হাসিনা মিথ্যাচারের সেই পুরনো রেকর্ড বাজিয়ে বলেছেন, জনগণ তাদের ম্যান্ডেট দিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনরায় সরকার গঠনের সুযোগ দিয়েছে। তাই তিনি জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের নাকি অনেকেই তাদের টেলিভিশন বন্ধ করে রেখেছিল। আবার অনেকে ভাষণের কিছু কথা শুনার পর টিভি বন্ধ করে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও চলছে কঠোর সমালোচনা। টিভি টকশোগুলোতে সমালোচনা করছেন বিশ্লেষকরাও। শেখ হাসিনার ভাষণের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রাজনৈতিক দলগুলোও।
সবার একটিই্ প্রশ্ন, একজন প্রধানমন্ত্রী এমনভাবে মিথ্যাচার করেন কিভাবে? রাতে সিল মেরে যিনি এটাকে জনগণের ম্যান্ডেট হিসেবে দাবি করতে পারেন, অসত্য কথা বলার দিক থেকে তাকে পেছনে ফেলার মতো কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বর্তমান বিশ্বে নেই।