অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী মাস অর্থাৎ অক্টোবরের প্রথম থেকেই মাঠ দখলের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম গত শনিবার ১৪ দলের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সভায় ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি জোটের আগেই তারা মাঠ দখলে নেবেন। এর আগে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক রাস্তায় নামলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঠ্যাং ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিয়মিত বয়ান করে যাচ্ছেন যে, বিএনপি ১০ বছরে ১০ মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। যারা ১০ বছরে কোনো আন্দোলন করতে পারেনি তারা ১ মাসে কিছুই করতে পারবে না। কাদের প্রতিদিনই বিএনপি নেতাদেরকে আক্রমন করে বলছেন, তারা ব্যর্থ। তাদের পদত্যাগ করা উচিত। বিএনপির মরা গাঙে আর পানি আসবে না।
ওবায়দুল কাদেরের এসব বক্তব্য এখন মানুষের কাছে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের মুখ থেকে প্রতিদিন একই রেকর্ড শুনতে শুনতে মানুষ এখন বিরক্ত হয়ে পড়েছে। আর মানুষ বিরক্ত হওয়ার যুক্তিসংগত কিছু কারণও আছে।
দেখা গেছে, ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর থেকেই সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটের উদ্যোগে কোনো সভা-সমাবেশের ডাক দেয়া হলেই শুরু হয় গণগ্রেফতার। আর জনসভা কিংবা সমাবেশের দুইদিন আগ থেকেই শুরু হয় সরকারি ধর্মঘট। জনসভার দিন থাকে অঘোষিত হরতাল। এমনকি ঢাকা শহরের আবাসিক হোটেলগুলো পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয় যাতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসে কোথাও অবস্থান করতে না পারে।
তারপর, ঢাকাসহ সারাদেশে কোনো বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা দিলেও পুলিশি বাধায় তা পালন করতে পারেনি। রাস্তায় কোনো মিছিল দেখলেই র্যাব-পুলিশ ও বিজিবি সরাসরি গুলি চালায়। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে সরকার বিগত ১০ বছর যাবত বিএনপি-জামায়াতকে দমনের কাজে নিয়োজিত রেখেছে।
কিন্তু, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ঠিকই পুলিশি প্রহরায় তাদের সকল কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।
ওবায়দুল কাদেরের এসব বক্তব্য নিয়ে রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ মানুষ নানা প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, নাসিম-ওবায়দুল কাদেররাতো র্যাব-পুলিশ দিয়ে বিগত ১০ বছর বিএনপিকে ঘরে আটকে রেখেছে। কাদেরের মুখে এসব বক্তব্য শোভা পায়না। আর র্যাব-পুলিশ ছাড়া নাসিম-কাদেররা কয় মিনিট রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন? পুলিশ ছাড়া মাঠে নামলে ওবায়দুল কাদেররা ৩০ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না।
কেউ কেউ বলছেন, এবার শুধু বিরোধী দলই নয়। সাধারণ জনগণও আওয়মী লীগের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। জনগণ যদি একবার রাস্তায় নেমে যায় তাহলে র্যাব-পুলিশ দিয়ে আর কাজ হবে না। মাঠতো দূরের কথা, আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে ঘর ছেড়ে পালাতে হবে।