অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কথিত উন্নয়নের নামে দীর্ঘদিন ধরেই জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। সরকারের বায়বীয় এ উন্নয়ন জনগণের চোখে না পড়লেও তারা দেশ-বিদেশে প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সরকারের এই কথিত উন্নয়নের সঙ্গে যোগ হয়েছে দেশের ফকির-মিসকিন। রাস্তা-ঘাটের এই ফকির-মিসকিনদের নিয়েও শেখ হাসিনা এখন প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিটিভিতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে এখন আর কোনো ফকির-মিসকিন নেই।
বিটিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটির একটি জায়গায় বলা হয়, বাংলাদেশের বর্তমানে কোন ফকির মিসকিন নেই।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিজ্ঞাপনের শুরুতেই দেখা যায় হামিদ নামে এক ব্যক্তি গ্রামের রাস্তা দিয়ে প্রাণপণে ছুটছেন। এবং তাকে হৈ হৈ করে তাড়া করছেন গ্রামের একদল নারী পুরুষ। সেই গ্রামেরই এক প্রবীণ ব্যক্তি দুই পক্ষের পথরোধ করে এই তাড়া করার কারণ জানতে চান।
এসময় এক নারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে, গ্রামের আরেক ব্যক্তি জহির তার প্রয়াত বাবা মায়ের স্মরণে ফকির মিসকিন খাওয়াতে চান। এজন্য তিনি হামিদকে পাঠিয়েছেন তাদেরকে দাওয়াত করতে। এতে তারা অপমানিত হয়েছেন। আমরা কি ফকির মিসকিন নাকি? এই বলে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ওই নারী।
পরে ভিড় থেকে আরেক ব্যক্তি জানান, তারা আগে ফকির মিসকিন থাকলেও এখন আর নেই। এখন তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের মানুষ। সরকার তাদের ঘর, বিদ্যুৎ সংযোগ, জায়গা জমি, পুকুর দেয়ার পাশাপাশি সন্তানদের লেখাপড়া সেই সঙ্গে উপার্জনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে জানান তারা।
সেখানে একটি সংলাপ এমন যে, আমরা গরিব হইতে পারি, কিন্তু ফকির মিসকিন না। সবশেষ তারা জানান, এইদেশে ফকির মিসকিন খুঁজতে আহে। বাংলাদেশ আর সেই দেশ নাই।
কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টো। রাস্তায় বের হলেই দেখা মিলে বিভিন্ন ধরণের ফকিরদের। বাসের ভেতরে এসেও তারা ভিক্ষা করছে। ঢাকা শহরের প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসে থাকে ফকিররা। আর মহল্লাতেতো বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষরা ভিক্ষা করতে আসেই। অথচ সরকার বলছে দেশে নাকি কোনো ফকির নেই।
শেখ হাসিনার কথিত আশ্রয়কেন্দ্রের এই বিজ্ঞাপন প্রচারের পর থেকেই এনিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে কেউ কেউ বলছেন “বাংলাদেশে ফকির মিসকিন নাই তাহলে কুরবানির চামড়ার টাকা দিলাম কাকে? ফকির মিসকিনের অংশটা নিলো কারা?”
অনেকেই বলছেন, ক্ষমতার শেষ প্রান্তে এসে শেখ হাসিনা এখন ফকির-মিসকিনদের নিয়েও ভাওতাবাজি শুরু করেছেন। এটা হলো শেখ হাসিনার সর্বশেষ প্রতারণা।