অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত ও বিতর্কিত মন্ত্রী হলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান। তিনি আওয়ামী লীগের একজন দাপুটে নেতা হিসেবেও পরিচিত। বর্তমানে দেশ অচল করে দেয়ার চাবিকাঠিও তার হাতে। তিনি ইচ্ছে করলেই যেকোনো মুহূর্তে সারাদেশ অচল করে দিতে পারেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও শাহজাহান খানের কাছে অসহায়।
এরপর বেফাঁস কথাবার্তায়ও অনেক এগিয়ে আছেন নৌমন্ত্রী শাহজাহান। তিনি বিরোধীদলের নেতাদেরকে উদ্দেশ্য করে সব সময়ই রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত কথাবার্তা বলে থাকেন। শুধু সভা-সমাবেশেই নয়, টিভি টকশোতে গিয়েও তিনি কথা বলার সময় সভ্য-বভ্যতা ও ভদ্রতা ভুলে গিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অশালীন ভাষায় কথা বলেন।
তবে, সব পরিচয় ছাপিয়ে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান এখন একজন দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে মানুষ এখন ঘুষের হাট বলে আখ্যায়িত করছে।
দেখা গেছে, গত বছরের শেষের দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর নিয়োগকে কেন্দ্র করে তুঘলুঘি কাণ্ড ঘটেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োগপ্রাপ্ত ৯২ জন লস্করের মধ্যে ৬০ জনেরও বেশি ছিল শাহজাহান খানের নিজ জেলা মাদারীপুরের লোক। পরবর্তীতে এ নিয়োগ বাতিলের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা মানববন্ধনও করেছেন। এমনকি, ওই সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এনিয়ে শাহজাহান খানের ওপর প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সর্বশেষ, বৃহস্পতিবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এস এম নাজমুল হককে ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার করেছে দুদক।
জানা গেছে, সৈয়দ শিপিং লাইনের জাহাজের রিসিভ নকশা অনুমোদন ও নতুন জাহাজের নামকরণের অনুমোদনের জন্য ১৫ লাখ টাকা ঘুষ চান নাজমুল। এর মধ্য থেকে পাঁচ লাখ টাকা আগেই নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় কিস্তির পাঁচ লাখ টাকা নিতে গিয়ে দুদকের ফাঁদে পড়েন তিনি। এ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদক তাঁর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান প্রকৌশলীকে আটকের পর অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য তিনি দিয়েছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতিবাজদের বড় একটি চক্র গড়ে উঠেছে। তারা চলাচলের উপযোগী নয় এমন নৌকা, ট্রলার, জাহাজ, স্টিমার ও লঞ্চকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অনুমোদন দিয়ে আসছেন। আর এসব টাকার বড় একটি অংশ যাচ্ছে মন্ত্রী শাহজাহান খানের পকেটে। এখানে ঘুষ দিলে সবই করা যায়। বলা যায় শাহাজানের দপ্তর এখন ঘুষের হাট।