অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট তথা রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের ফলাফল আজ রোববার বিকেলে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে সিনেটের ২৫ জন প্রতিনিধির মধ্যে ২৪ জনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগপন্থী গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ থেকে বিজয়ী হয়েছে। আর বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী পরিষদ থেকে মাত্র একজন ঢাবির সাবেক উপাচার্য আ ফ ম ইউসূফ হায়দার বিজয়ী হয়েছেন।
এই ফলাফলে সিনেটে প্রতিনিধি নির্বাচনে বিএনপিপন্থীদের চরম ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনে ভেতরে অন্য কোনো কারচুপি, ভোট গণনায় গরমিল ও ঢাকার বাইরের কেন্দ্রগুলোর ভোট গণনায় ক্ষমতাসীনরা সুক্ষ্মভাবে কিছু করেছে কিনা সেটা এখনো জানা যায়নি। আর এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে বিএনপিপন্থীরা কোনো অভিযোগ করেছেন এমন খবরও পাওয়া যায়নি।
অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাঙ্খীদের মধ্যে বিশাল একটা সংখ্যা রয়েছে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। কমপক্ষে ১০ জন প্রতিনিধি অতিসহজেই পাস করার কথা। কিন্তু বিএনপিপন্থীদের এমন চরম ভরাডুবিতে অনেকেই হতাশ হয়েছেন। অনেকে আবার ক্ষোভও প্রকাশ করছেন।
ঠিক কী কারণে বিএনপিপন্থীদের এমন ভরাডুবি হয়েছে সব কিছু জানা না গেলেও প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল। এনিয়ে জাতীয়তাবাদী পরিষদের সাপোর্টার হিসেবে পরিচিত এমন অনেকেই প্রার্থীদের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, আওয়ামীলীগপন্থীরা ভোটের জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করলেও বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী পরিষদের প্রার্থীরা তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করেনি। এনিয়ে কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।
ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু সালেহ আকন ঢাকা কেন্দ্রের ভোটের আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে জাতীয়তাবাদী পরিষদের প্রার্থীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সালেহ আকন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এদেশের জাতীয়তাবাদীরা মনে করেন মানুষ তাদেরকে ভোট দিতে বাধ্য। তাদেরকে ভোট না দিয়ে, সমর্থন না করে মানুষ যাবে কোথায়! ধরে নেয়া যাক আজকের ঢাবি’র সিনেট নির্বাচন শুরু হয়েছে। এখানে প্রধানত: জাতীয়তাবাদী পরিষদ ও গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের পক্ষে সকাল থেকে ১৪ টি ক্ষুদে বার্তা এসেছে ভোট প্রার্থণা করে। অপরদিকে, সকালে একটি বার্তা পেয়েছি জাতীয়তাবাদী পরিষদের পক্ষ থেকে। অন্তত একশ’ ফোন পেয়েছি গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে। আর জাতীয়তাবাদী পরিষদের পক্ষ থেকে কেউ একজন ভোট চাইলেন না। কি আশ্চর্য! এভাবে আসলে কোন ভোটে জেতা যায় না। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন এই সমালোচনা করলাম? তাদেরকে স্রেফ বলে দিচ্ছি; আপনাদের কারণেই আজ এই দুর্দশা।’
সাংবাদিক সালেহ আকনের মতো আরও অনেকেই এভাবে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এও বলছেন যে, বিএনপির লোকজনের অহংকার বেশি। তাদের জন্য সামনে আরও কঠিন পরিণতি অপেক্ষা করছে।