অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে সমালোচিত ও বিতর্কিত মন্ত্রণালয় হলো নুরুল ইসলাম নাহিদের শিক্ষামন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিনই নতুন নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন। তারা অনিয়ম দুর্নীতিতে এমনভাবে জড়িয়ে পড়েছে যে সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়ের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নাম এক নম্বরে উঠে এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিব ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত। এখানে টাকা ছাড়া কোনো ফাইল নড়ে না। আবার টাকার মাধ্যমে যেকোনো দুই নম্বর কাজকেও সহজে করিয়ে নেয়া যায়।
বিশেষ করে প্রতিবছর পাঠ্যবই মুদ্রণ ও উপকরণ ক্রয় বাবদ খরচ দেখিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। প্রতিবছর জানুয়ারিতে এসব নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও পরে রহস্যজনক কারণে এসব চাপা পড়ে যায়।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রণালয় নিয়ে টিআইবি তাদের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলেছে, চলতি বছর পাঠ্যবই মুদ্রণ, কালি-কাগজ ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয়ে ৪২৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা অনিয়ম করেছে। শিক্ষাখাতে এখন পদে পদে অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে।
তারপর এর সঙ্গে আছে প্রশ্ন ফাঁস। এখন সব শ্রেণির প্রশ্নই ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই জড়িত। দুর্নীতি দমন কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ গত রোববার শিক্ষামন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বলেছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত।
এসব নিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন চরম বেকায়দা অবস্থায় রয়েছেন।
এরই মধ্যে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা খচিত কেক কাটার আয়োজন করে আরেক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যদিও পরে বাধার মুখে আর কেকটি তারা কাটতে পারেনি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশের পর এনিয়ে সর্বমহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, এটাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। শুধু ধর্মই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। আর ওরা যা করবে সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
বিশিষ্টজনরা বলছেন, লাখো নারী-পুরুষের জীবন, রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ এই পতাকাটি পেয়েছে। এই পতাকার আদলে কেক তৈরি করে কাটা মানে এই পতাকাকেই কাটার সামিল। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। এমন গর্হিত কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।
Discussion about this post