জনদৃষ্টি ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী ‘ছু মন্তর’ কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।
তিনি বলেছেন, ক্ষুধা জ্বালা, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের অভাবে প্রতিদিনই বাড়ছে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মৃতের সংখ্যা। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি যাতে আন্তর্জাতিকভাবে কেউ জানতে না পারে, দেশের মানুষ যাতে জানতে না পারে, সেটাকে আড়াল করতে প্রধানমন্ত্রী ১২শ’ কোটি টাকার বিষয়টি সামনে এনেছেন। মৌলিক ইস্যু থেকে জনদৃষ্টিকে সরাতে মাঝে-মধ্যেই এ ধরনের ছু মন্থর দেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ নাগরিক সংসদ আয়োজিত ‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, চক্রান্ত এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট’- শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে রিজভী বলেন, দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক তো আপনিই । পদ্মাসেতুতে সুনির্দিষ্টভাবে একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি বিদেশী আর্থিক সংস্থা অভিযোগ তুলেছিল। সংস্থাটি এখন পর্যন্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করেননি। আর আপনি তাকে বললেন দেশপ্রেমিক। দুর্নীতির চাষ-বাস, উৎপাদন থেকে শুরু করে এতো বড় পৃষ্ঠপোষক পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশে করে রিজভী বলেন, আপনি আজকে জোর করে ক্ষমতায় আছেন। এই জোর করে ক্ষমতায় থাকার কারণই তো হচ্ছে ১ টাকার কাজকে আপনি ১০০ টাকা করেছেন বিভিন্ন প্রজেক্ট, মেগা প্রজেক্টের নামে। সেই সব প্রকল্পের টাকা কোথায়? আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন হিসাব-নিকাশ করে বলেছে, প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকা শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা বাংলাদেশ থেকে পাচার করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দুঃশাসনের কারণে কেউ কথা বলতে পারছে না। যারা এসবের গবেষণা করেন তারা ভয়ে সেটা প্রকাশ করতে পারছেন না। কিন্তু বাইরের গণমাধ্যম বা বাইরের গবেষকরা তো চুপ করে বসে নেই। তারা সেটা দেখছে। ক্ষমতাসীন দলের অন্যদের বাদ দিলাম, শুধু প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা যত টাকা নিয়ে গেছে সেই টাকার হিসাব একদিন জনগণের কাছে দিতে হবে।
রিজভী আহমেদ দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকারের অশুভ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। আবার হঠাৎ করে যেভাবে গুম, ক্রসফায়ার ও গ্রেপ্তার বেড়েছে তাতে মনে হয় সরকারের কোনো একটা অশুভ পরিকল্পনা আছে। কোনো খারাপ একটি কাজে দিকে তারা এগুচ্ছে। তাই যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন তাদের সর্তক খাকতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য আমাদের সর্তক থাকতে হবে। কাউকে ভয় পেলে চলবে না। সকল ভয়কে জয় করে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিতে হবে।
এ সময় তিনি বরিশালের সাবেক এমপি জহিরউদ্দির স্বপনের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনাসহ নওগাঁও, মুন্সীগঞ্জ, ফেনী, পটুয়াখালী, রংপুর, রাজশাহী, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে দলের নেতা-কর্মীকে গুম-হত্যাকাণ্ড ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ ১৬ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা দায়ের ও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
সূত্র: মানবজমিন
Discussion about this post