প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কিন্তু আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব নিতে পারবেন না। সাংসদদের নিজ যোগ্যতাবলে পাস করে আসতে হবে। এর জন্য এখন থেকেই মাঠে নামতে হবে, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
আজ রোববার রাতে জাতীয় সংসদে সরকারি দলের বৈঠক কক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠকটি ছিল রুদ্ধদ্বার। পরে একাধিক সাংসদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের সাফল্য আছে। কিন্তু এই সাফল্য প্রচারে সফল নয় আওয়ামী লীগ। এই ব্যর্থতার জন্য দলীয় সাংসদদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সরকারের সাফল্য মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দেন।
সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন আগামী নির্বাচনে কারা দলের মনোনয়ন পাবেন তা জানার জন্য তিনি ছয় মাস অন্তর অন্তর জরিপ চালাচ্ছেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন। এসব জরিপে যার অবস্থান ভালো আসবে, তারাই মনোনয়ন পাবেন। এ বিষয়ে কারও কথা শোনা হবে না। তিনি আরও বলেন, এটা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নয়, যে একজন ভোট না দিলেও সমস্যা নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হবে। ফলে যাকে মনোনয়ন দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আসবে তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে দলীয় নেতাদের সতর্ক করেন শেখ হাসিনা। তিনি নেতাদের আরও বলেন, যাদের অবস্থা খারাপ, তাদের এখনো ভালো করার সুযোগ আছে। এ সময়ের মধ্যে নিজেদের অবস্থান ভালো করতে পারলে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
বৈঠক সূত্র বলেছে, এবার প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কত কোটি বই বিতরণ করা হয়েছে তা একজন সাংসদের কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। আরেকজনের কাছে জিজ্ঞাসা ছিল, বর্তমানে দেশে কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। সরকার কৃষকদের কি পরিমাণ সহায়তা দেয় এটাও জানতে চান কারও কারও কাছে। এভাবে বেশ কিছু সাংসদের কাছে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু সাংসদদের এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি সরকারের সাফল্য প্রচারে ব্যর্থতার কথা বলেন। তিনি এ সময় সাংসদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও তৎপর হয়ে মানুষকে উন্নয়নের তথ্য জানানোর নির্দেশ দেন।
ছিলেন স্বতন্ত্র সাংসদেরা
বৈঠক সূত্র জানায়, রোববারে বৈঠকে ১১ জন স্বতন্ত্র সাংসদ প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে অংশ নেন। শেখ হাসিনা তাদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে জানান, এই সাংসদেরা এখন থেকে আওয়ামী লীগের অংশ। ১৬ জন স্বতন্ত্র সাংসদের মধ্যে বাকি পাঁচজন অংশ নেননি। এঁরা হলেন উষাতন তালুকদার, রুস্তম আলী ফরাজী, মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন), মকবুল হোসেন ও রহিম উল্লাহ।
গত ৩ মে স্বতন্ত্র সাংসদদের একটি দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সংসদ ভবনে বৈঠক করেন। সেখানেই তাদের আওয়ামী লীগে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post