ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোসহ নানা কারণেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েন চলছে। এ নিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে চলছে উত্তেজনা। এরই মধ্য উত্তর কোরিয়া সামরিক বিভিন্ন অস্ত্রসহ বিশাল সেনাবহর প্রদর্শন করেছে। দেশটির সেনাবহরের বিশাল একটি অংশ নারী। এ সংখ্যা পাঁচ লাখ। এরা যেকোনো পরিস্থিতিতে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। কমিউনিস্ট দেশটির দাবি এমনটাই।
অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ এক্সপ্রেস ও দ্য সানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া তাদের পাঁচ লাখ নারী সেনাকে প্রস্তুত রেখেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে এ যোদ্ধারা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের পাশাপাশি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে অনায়াসে আঘাত হানতে সক্ষম। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের পুরো নারী সেনাবাহিনী যেকোনো মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে লড়াইয়ে অংশ নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত। গত ১৫ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সুংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকীতে পিয়ংইয়ংয়ে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ হয়। সেখানে অস্ত্র-সরঞ্জামের পাশাপাশি ৬০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। গত বছর এই পাঁচ লাখ নারী যোদ্ধা গোলাগুলি ও রকেট ছোড়ার অনুশীলনও করেছেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) এক খবরে বলা হয়েছে, দেশটির নেতা কিম জং-উন নারী যোদ্ধাদের মধ্যে বন্দুকের শুটিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কিম উন হঠাৎ করে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। নারীদের যুদ্ধে দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য এ নির্দেশ দেন তিনি।’ কিমকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটা বাস্তব যুদ্ধাবস্থার মধ্য কীভাবে পরিচালিত হতে হবে, তার ধারণা দিতেই এ আয়োজন।’ কিম বলেন, ‘একটি প্রকৃত যুদ্ধের জন্য অপ্রত্যাশিত প্রশিক্ষণ কোনো ব্যাপার নয়। সেনাদের এ ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য মূল্য দিতে হয়।’
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীতে নারী সেনার সংখ্যা কত, তা অজানা। পুরুষদের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীতে শতকরা কত নারী সদস্য রয়েছে, তা যাচাই করা যায়নি। ধারণা করা হয়, দেশটির সেনাবাহিনীতে নারী সদস্যদের সংখ্যা ১০ শতাংশের নিচে। বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্রে বলা হয়, এ সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি হতে পারে। কমিউনিস্ট দেশটিতে ১২ লাখ সেনাসদস্য আছে। সে হিসেবে নারী সেনাসদস্য পাঁচ লাখ।
২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা ১১ লাখের বেশি। এ ছাড়া ‘রিজার্ভ ফোর্স’-এ আছে আরও ছয় লাখ সেনাসদস্য।
দক্ষিণ কোরিয়া অভিযোগ করেছে, উত্তর কোরিয়া পূর্ব উপকূলবর্তী বিশাল এলাকায় সামরিক মহড়া চালিয়েছে। সম্প্রতি কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ মার্কিন সাবমেরিন দক্ষিণ কোরীয় উপকূলে অবস্থান নিয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post