বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো বারংবার বলে আসছে শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসছে ও টিকে রয়েছে। এর প্রমাণ শেখ হাসিনাও দিয়ে আসছে। সবচেয়ে লজ্জাজনক ব্যাপার হলো আগামীকাল শেখ হাসিনার চীন সফর রয়েছে। এই সফরের জন্য তাকে মোদির কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে ভারতের আপত্তি নেই। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চীন সফরের বিষয়টি অবহিত করেছিলেন। তার আপত্তি নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কথা কি কোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? বাংলাদেশ কি এখন স্বাধীন রাষ্ট্র আছে? নাকি ভারতের আজ্ঞাবহ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে?
এই বছরের অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত পাশে ছিল বলেই আওয়ামীলীগ নির্বাচনে জিততে পেরেছে। একথা সুষ্পষ্ট যে, এখন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জিততে জনগণের ভোটের দরকার হয় না। ভারতই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। বিনিময়ে বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে শেখ হাসিনা।
সাম্প্রতিক ভারত সফরে শেখ হাসিনা আবারো দেশের বিভিন্ন সম্পদ তুলে দিয়েছে ভারতের হাতে। যেটা হাসিনা বার বার করে আসছে। এই প্রসঙ্গে খোদ হাসিনা ২০১৮ সালের ৩০ মে বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে যেটা দিয়েছি তারা তা সারা জীবন মনে রাখবে।’
হাসিনা বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছে। এর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন বাংলাদেশকে করতে হলেও বাংলাদেশ ট্রানজিট ফি নিতে পারে নি। গত ১৫ বছরে হাসিনা ভারত থেকে কোনো সুবিধা আদায় করতে পারেনি। আমাদের পানির নাযত হিস্যা দেওয়া হয় না। অথচ হাসিনা মোংলা বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের ফ্রি সুযোগ করে দিয়েছে। ফেনী নদী থেকে পানি প্রত্যাহারের সুযোগ দিয়েছে।
এবারও হাসিনা ভারতকে রেল ট্রানজিট দেওয়ার অঙ্গীকার করে আসছে অথচ এর জন্য বাংলাদেশ কী পাবে তার কোনো বর্ণনা নেই। অর্থাৎ আগের মতো বিনা মূল্যে ভারত বাংলাদেশের শত শত একর জমি ব্যবহার করবে।
অথচ ভারত আমদের চিকেন নেক করিডোর বা শিলিগুড়ি করিডোর ব্যবহার করে নেপাল যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। অথচ এতে ব্যবহার হবে ভারতের মাত্র ২২ কি.মি. জমি। ভারত আমাদের ২২ কি.মি. দিতে রাজি নয়, অথচ আমরা শত শত কিলোমিটার দিতে রাজি হচ্ছি বিনে পয়সায়।
এ কেমন বন্ধুত্ব! এ কেমন কূটনীতি। মূলত শেখ হাসিনা দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে। তাই তাকে এখন মোদির অনুমতি নিয়ে অথবা মোদি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে রাজনীতি করতে হয়। কারণ হাসিনার খুঁটির জোর হচ্ছে ভারত, জনগণ নয়।
- রাজনৈতিক বিশ্লেষক
Discussion about this post