বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা কী পরিমাণ লুটপাট, দুর্নীতি ও দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে সেটা আর নতুন করে বলার দরকার নাই। দেশের এমন কোনো সেক্টর নাই যেখান থেকে তারা লুটপাট করেনি।
বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাত, ব্যাংক খাত, শেয়ারবাজার ও কথিত উন্নয়ন প্রকল্প থেকে লাখ লাখ কোটি লুটকরে বিদেশে পাচার করেছে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা। শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়ের বিদেশে অর্থপাচারের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত ফুরুরিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের আগস্টে যে রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। দুই বছরের ব্যবধানে সেই রিজার্ভ এখন ১৯ বিলিয়ন ডলারে চলে আসছে।
আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও হাসিনার ছেলে জয় বিগত ১৬ বছর ধরে কয়েকজন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার করছে। এদের মধ্যে অন্যতম দুইজন ব্যবসায়ী হল দরবেশ নামে খ্যাত শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও ব্যাংক খাতের মাফিয়া হিসেবে পরিচিত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার শরীফুল আলম। এই দুই ব্যবসায়ীকে দিয়ে আমদানি-রপ্তানির আড়ালে শেখ হাসিনা বিদেশে অর্থপাচার করেছে। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একটি ন্যাক্কারজনক আদেশের মাধ্যমে এটা প্রমাণ হয়েছে যে এস আলমের সব অর্থপাচারের সাথে শেখ হাসিনা জড়িত।
কয়েক মাস আগে এস আলমের বিভিন্ন দেশে ১০০ কোটি ডলার পাচার নিয়ে একটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই এ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এস আলম অবৈধভাবে দেশ থেকে বিদেশে টাকা নিয়ে কোন কোনো দেশে কী কী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েছে তার বিস্তারিত ফিরিস্তি পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। এস আলমের এসব অর্থপাচারের ঘটনা অনুসন্ধান করতে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন একজন আইনজীবী। তখন হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিল অনুসন্ধান করতে। কিন্ত হাসিনার গৃহপালিত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সোমবার আদেশ দিয়েছেন এস আলমের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অনুসন্ধান চালানো যাবে না।
গত বছররে ৪ আগস্ট ডেইলি স্টারে এস আলমরে র্অথপাচার নিয়ে একটি প্রতবিদেন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনের বিষয়টি ৬ আগস্ট আদালতরে নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারস্টিার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এ প্রতিবেদন দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। পরে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে বিদেশে র্অথপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসরে মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থপাচার ঠেকাতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টলেজিন্সে ইউনিট, র্দুনীতি দমন কমশিন ও বাংলাদশে ব্যাংকের র্ব্যথতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
কিন্তু এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিদেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অনুসন্ধান নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণরাও বলছেন, আদালতের কাজ হল দুর্নীতি বন্ধে কাজ করা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে করা অনুসন্ধান বন্ধ করা আদালতের কাজ নয়। প্রধান বিচারপতি এমন আদেশ দিয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আর প্রধান বিচারপতি কেন এস আলমের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অনুসন্ধান বন্ধ করলেন সেটা সবাই জানে।
এস আলমের পাচারের টাকার ভাগ শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের লোকজনও পেয়েছে। কথায় আছে-কান টানলে মাথা আসে। এখন এস আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালালে শেখ হাসিনা, তার বোন রেহানা ও জয়ের নাম চলে আসবে। তাদেরকে রক্ষা করতেই মূলত দেশের সুপ্রিম কোর্ট নামের মুজিব কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই আদেশ দিয়েছেন।
Discussion about this post