ইভিএম-এর পক্ষে সাফাই গাইলেন শেখ হাসিনার নিয়োগ দেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি স্পষ্ট করেই বললেন, ইভিএম কোনোভাবেই হ্যাকিং সম্ভব নয়। যুক্তি হিসাবে উল্লেখ করেছেন এটি ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। এটাকে বহুভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আমরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরীক্ষা করে যাচ্ছি। এই বক্তব্যের মাধ্যমে কাজী হাবিবুল আওয়ামী লীগের দাবি প্রতিধ্বনি করলেন।
বুধবার (২৭ জুলাই) আটরশির পীরের জাকের পার্টির সঙ্গে সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে সিইসি এ তথ্য জানান। জাকের পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শামীম হায়দারের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়।
শেখ হাসিনার এসাইনমেন্ট নিয়ে কাজী হাবিবুল আওয়াল নির্বাচন কমিশনে যোগদানের পর থেকেই নানা মুখরোচক কথাবার্তা বলছেন। রাজনৈতিক দল গুলোকে আস্থায় নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই চেষ্টার অংশ হিসাবেই তিনি দফায় দফায় সংলাপ নাটক করে যাচ্ছেন। এই সংলাপ নাটকে এবার তিনি সরাসরি ইভিএম-এর পক্ষে সাফাই গাইলেন। যদিও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমে’র পক্ষে নয়। একমাত্র আওয়ামী লীগ ও তাঁর মিত্র দল গুলো ইভিএম চাচ্ছে। কাজী হাবিবুল আওয়াল ইভিএম নিয়ে বুধবার আওয়ামী লীগের ভাষায়ই কথা বলেছেন।
সংলাপে জাকের পার্টি ইভিএম পদ্ধতিতে কারচুপির অভিযোগ তুলে দলটি ব্লক চেইন টেকনোলজি ও ই-ভোটিং চালুর প্রস্তাব করেন।
তাদের প্রস্তাবের জবাবেই সিইসি ইভিএমের পক্ষে সাফাই গাইলেন। সিইসি বলেন, বাইরে অনেক কথাই চাউর আছে যে, এটা হ্যাকিং হতে পারে বা এটাতে ভোট চুরি হতে পারে। কিন্তু, আমরা এ পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোনো এভিডেন্স পাইনি। এ বিষয়টি কেবল অবহিত করছি। আমরা ইভিএমের ওপর এখনো কোনো কাজদ করি না। যাতে কোনো অপপ্রয়োগ সম্ভব না নয়, সেটা নিশ্চিত করে তারপর ইভিএমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এটা অর্জন করতে হলে সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এজন্য সব দলের সক্রিয় সহায়তা চাই। কারণ নির্বাচনের মাঠকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সব পার্টিকে থাকতে হবে। সবাই যদি থাকেন তাহলে নির্বাচনের মাঠে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। তখন আমাদের কাজটি কমে যায়। রাজনৈতিক দলগুলো একটি ভারসাম্য সৃষ্টি করতে পারে।’
জাকের পার্টিতে তরুণ নেতৃত্ব থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, তরুণরাই নতুন সৃষ্টি করতে পারে। কারণ তাদের মেধায় তারুণ্য থাকে। আমাদেরটা কিন্তু অলরেডি বোর হয়ে গেছে। কাজেই তরুণদের উদ্দীপ্ত করতে হবে।
সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন হবে সার্বিকভাবে একটি অনুকূল পরিবেশে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে যে পরিবেশে.. এটা মাঝে মাঝে বিতর্কিত হয়ে যায়। পরিবেশটি আমরা অনুকূল করতে পারলে ভোটাররা নিরাপদ ও আস্থাশীলভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে।
তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা চাই। সেই চাওয়াটা পূরণ করতে হলে সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
সিইসি বলেন, গণতন্ত্রকে অস্বীকার করার উপায় নেই। গণতন্ত্রের মাধ্যমেই আমাদের স্বাধীন দেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। সেই জন্য আমাদেরকে সহযোগীতা করবেন। সক্রিয় সহযোগীতা চাই। আগামী নির্বাচনে আপনাদের পরিপূর্ণ সহায়তা, সমর্থন ও সক্রিয় অংশগ্রহণ চাই। কারণ নির্বাচনের মাঠে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সব দলের ওখানে থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সবাই যদি থাকেন আপনারা, তাহলে নির্বাচনে একটা ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। তখন আমাদের কাজ কমে যায়, আপনারা আপনারাই কিন্তু ভারসাম্য সৃষ্টি করেন। আমার এই আবেদন থাকবে।
সূত্র: আমার দেশ
Discussion about this post