অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বন্যায় সবচেয়ে বেশি দূর্গত এলাকার ৬ জেলার মানুষের জন্য ১৮ জুন পর্যন্ত বরাদ্দ করা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা এবং ২৬ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার। দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অথচ, পদ্মা সেতু নিয়ে উৎসব আয়োজনের জন্য ৪ জেলাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এই চার জেলা হচ্ছে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারিপুর ও শরীয়তপুর। বাকী অন্য সব জেলার জন্য ১০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরকারি বরাদ্দ করা এক পত্রে দেখা যায়, ঢাকা জেলার প্রশাসকের বরাবরে এক কোটি ৫০ লাখ, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের বরাবরে ১ কোটি ৩৯ লাখ, মাদারিপুর জেলা প্রশাসকের বরাবরে ১ কোটি ৩৯ লাখ এবং শরীয়তপুর জেল প্রশাসকের বরাবরে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, বাকী সব জেলার জন্য জেলা প্রশাসকদের বরাবরে ১০ লাখ করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় এই টাকা ব্যায় হবে পদ্মা সেতুর আনন্দ উৎসবে। দূর্গতির সময় জনগণের পাশে না থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদি সরকার ব্যস্ত উৎসব আর আনন্দে।
বন্যায় যখন মানুষ না খেয়ে আছেন। লাশ দাফনের সুযোগ নেই অনেক এলাকায়। দাফনের অপেক্ষায় লাশ বাক্সবন্দি করে রাখার খবর পত্রিকায় বের হয়েছে। খাবারের জন্য মানুষের হাহাকার করছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য মানুষ তীর্থের কাকের মত অপেক্ষায় থাকেন। এই অবস্থায় সরকার আনন্দ ফূর্তি করতে ব্যায় করছে কোটি কোটি টাকা।
সবচেয়ে বেশি দুর্গত এলাকা হচ্ছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। ইতিহাসের ভয়াবহ বন্যা প্লাবিত করেছে এই দুই জেলা।
সূত্র জানায়, বেশি দুর্গত সিলেট জেলার জন্য ২০০ টন চাল, ৩০ লাখ টাকা এবং ৮ হাজার প্যাকেট খাবার, সুনামগঞ্জ জেলার জন্য ৩০ লাখ টাকা এবং ৮ হাজার প্যাকেট খাবার, নেত্রকোনার জন্য ১০০ টন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ৩ হাজার প্যাকেট খাবার, কুড়িগ্রামের জন্য ১০ লাখ টাকা এবং ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় অন্তহীন দুর্দশায় রয়েছেন মানুষ। ঠিক এই সময়ে পদ্মা সেতু উৎসবে হতে যাচ্ছে ২৫ জুন (শনিবার)। দেশের মানুষকে বন্যায় ভাসমান রেখে সরকার উৎসবে মেতে উঠেছে। সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে উৎসবে যোগ দিতে নোটিশ জারি করেছেন জেলা প্রশাসকরা। প্রতিটি জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সরকারি ছুটির দিনে (শনিবার) উৎসবে যোগ দিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এমনকি জেলা প্রশাসনের এখতিয়ার বহির্ভূত দুদকের জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদেরও নোটিশ করেছেন জেলা প্রশাসক।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২৫ জুন সকাল ৯টায় রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান চত্ত্বরে আনন্দ ফুর্তিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই চত্বর থেকে আনন্দ র্যালি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হবে। এই র্যালিতে জেলার প্রতিটি অফিস আদালতের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
শুধু রাজশাহী নয়, দেশের প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ওই জেলায় সকল অফিস-আদালতে অনুরূপ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
Discussion about this post