ফ্যাসিবাদি সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রবিবার দলীয় নেতাদের সাথে বৈঠকে বলেছিলেন আগামীতে দেশে ৩০০ আসনেই ভোটগ্রহন হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। তাঁর এই বক্তব্য প্রচারের একদিন পরই নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইভিএম-এ ভোট গ্রহনের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১৩০ আসনে ইভিএম-এ ভোট গ্রহনের মত সক্ষমতা রয়েছে।
সোমবার (৯ মে) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ইসি’র এই বক্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে, শেখ হাসিনা কি না জেনেই দলীয় নেতাদের এমন তথ্য দিয়েছেন?
ইভিএম-এ ভোট গ্রহন এবং নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে বলে দৃঢ়তার সাথেই শেখ হাসিনা দলীয় নেতাদের জানিয়েছেন। আগামী নির্বাচনের প্রস্ততি নিতেও নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এতেই শেষ নয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে বলেও আগাম জানিয়েছেন দলীয় নেতাদের।
তাঁর এই বক্তব্যের পর রাজনীতিতে নানা প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কি আগের মতই তাঁর নিয়ন্ত্রিত আরেকটি নির্বাচনের প্রস্ততি নেওয়া হচ্ছে? এমন প্রশ্ন করছেন অনেকে।
কেউ কেউ আবার বলছেন, শেখ হাসিনার নিয়োগ দেওয়া নির্বাচন কশিনের প্রতি আস্তা তৈরির জন্যই কি আলমগীরকে দিয়ে এখন এসব বলানো হচ্ছে?
এদিকে শেখ হাসিনার নিয়োগ দেওয়া নির্বাচন কমিশনার আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ইভিএম নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের এখন যে ইভিএম আছে তাতে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১৩০ আসনে ভালোভাবে ভোট করতে পারবো। এর চেয়ে বেশি আসনে ইভিএমে ভোট করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, সংলাপে ইভিএমের পক্ষে-বিপক্ষে অনেকেই মতামত দিয়েছেন। আমরা এগুলো পর্যালোচনা করছি।
নির্বাচন কমিশনার ইভিএম-এর বিষয়ে ভারত থেকে অভিজ্ঞতা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, পাশের দেশ ভারতে সম্পূর্ণ নির্বাচন ইভিএমে হয়। তারা কীভাবে সফল হলো? তারা নিশ্চয়ই একটা সিস্টেমের মাধ্যমে সফল হয়েছে। ওগুলোই আমরা স্টাডি করছি। তারা যেগুলো করেছে, আমরা সেগুলো এখানে করতে পারি কিনা সেটা দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি আইনানুযায়ীও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ভারত যেমন অবিশ্বাসের জায়গা থেকে বিশ্বাসের জায়গায় এসেছে আমরাও সেভাবে চেষ্টা করবো। তাহলে সবার কাছে ইভিএম গ্রহণযোগ্য হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের দলীয় সভায় ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইভিএম নিয়ে তারা কমিশনের কাছে প্রস্তাব দেবে। তবে এখনো আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো ফরমাল বা ইনফরমাল প্রস্তাব আসেনি। তারা প্রস্তাব দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কমিশন দেবে। তবে বলে রাখা ভালো সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব আসার কোনো সুযোগ নেই। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Discussion about this post