অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
রোববার ছিল রমজানের প্রথম দিন। এদিন ইফতারের জন্য বিশেষ আয়োজন থাকবে এমনটাই প্রস্তুতি ছিল প্রায় সবার। কিন্তু সেই আয়োজন শুরুই করা যায়নি। কারণ শনিবার রাত থেকেই রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গ্যাস না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে রপ্তানিমুখী অনেক শিল্পকারখানার উৎপাদন। সরবরাহ কমে যাওয়ায় কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। এর ফলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি দ্বিগুণ হয়েছে। এর সাথে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতো আছেই।
সারাদিন রোযা রেখে ইফতার ও সাহরীতে একটু ভাল কিছু খাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল-বাংলাদেশের নাগরিকদে;র সেই সৌভাগ্য হয় না। সরকারের হঠকারীতা ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের কারণে প্রতিবছরই রমজান মাসে এক মহা দুর্ভোগ নেমে এসে মানুষের উপর।
এছাড়াও রমজানের প্রথম দিনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ লোড শোডিংয়ের কারণে রোযাদারদের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। ভোগান্তির অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে সরকারের উপর তাদের ক্ষোপ প্রকাশ করছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল-রমজানে কোনো প্রকার লোডশেডিং না দিতে। কিন্তু এই কে শুনে কার কথা?
রোজার প্রথম দিনেই গ্যাসের জন্য হাহাকার
প্রথম দিন সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ছিল গ্যাসের। হঠাৎ করেই কাউকে না জানিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রোববার সারাদিন গ্যাস ছিল না। মানুষ রান্নাবান্না করতে পারেনি। বিশেষ করে প্রথম রোযার দিন সবার লক্ষ্য থাকে ইফতারের দিকে। আর অধিকাংশ মানুষই নিজেদের বাসায় ইফতার তৈরি করে। কিন্তু সরকার মানুষকে সেই সুযোগ দেয়নি।
বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের মালিকানাধীন বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারের কারণে গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। তবে আজ-কালের মধ্যে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে পেট্রোবাংলা।
এদিকে হঠাৎ করে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে রাজধানীসহ আশেপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ। প্রথম রমজানের ইফতার তৈরিতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে ঘরে ঘরে। গ্যাস সঙ্কটের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক বাসিন্দা।
রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা মসিউর রহমান বলেন, সকাল থেকে গ্যাসের চাপ ছিলো না। টিম টিম করে চুলা জ্বলছিল। দুপুরের পর থেকে চুলা একবারেই জ্বলেনি। বাধ্য হয়ে দোকান থেকে ইফতার কিনে আনতে হয়েছে।
সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের অধিকাংশ শিল্প কারখানাতেই রোববার সকাল থেকেই গ্যাসের চাপ একবারেই কম ছিল। একাধিক শিল্প কারখানার মালিক জানান, তাদের কারখানা চালাতে কমপক্ষে ১৫ পিএসআই চাপে গ্যাস প্রয়োজন হয়। কিন্ত রোববার সকাল থেকে ২/৩ পিএসআই এর উপর গ্যাসের চাপ ছিলো না। ফলে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্যাস না থাকায় মানুষ বাসায় ইফতার তৈরি করতে পারেনি। এমনকি ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে দোকানে গিয়েও মানুষ ইফতার কিনতে পারেনি। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে শুধু লেবুর শরবত দিয়েই ইফতার সেরেছেন।
অবৈধ প্রধানমন্ত্রীসহ তার দলের নেতারা সারাদিনই ভাঙ্গা রেকর্ড বাজান যে, দেশ এখন সব কিছুতেই ভরপুর। দেশে কোনো কিছুর অভাব নেই। শেখ হাাসিনা নাকি দেশের মানুষকে সুখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে। অথচ, রোযার প্রথম দিনই মানুষ গ্যাসের অভাবে ইফতার করতে পারেনি।
বাজারে আগুন, ঘরেই তৈরি হচ্ছে ইফতার
দুই বছর আগে রোজাদাররা যেমন ইফতার বাজারের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। বর্তমান বাজারে পরিস্থিতি তেমনটা নেই।
নামি-দামি হোটেল-রেস্তোরাঁ ছাড়া ইফতার বাজারে কেউ তেমনভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। বিক্রেতারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রভাব পড়েছে সারাদেশের ইফতার বাজারে। আর ক্রেতারাও এ কথার সঙ্গে একমত।
রোববার (৩ এপ্রিল) প্রথম রমজান ও সোমবার (৪ এপ্রিল) দ্বিতীয় রমজান বিকেলে রাজধানী, বরিশাল খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী বিগত বছরগুলোর থেকে এবারে ইফতার সামগ্রী বিক্রির বিক্রেতা কয়েকগুণ বাড়লেও ক্রেতা কমেছে । খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো তাদের সামনের অংশে যেমন ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তেমনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ফুটপাত ও রাস্তার মোড় দখল করে ইফতার সামগ্রী নিয়ে সাজিয়ে-গুছিয়ে বসেছেন। তবে হাতে গোনা কয়েকটি ইফতার বিক্রির দোকান ছাড়া ক্রেতাদের ভিড় ছিল না কোথাও। ক্রেতাশূন্য অনেক দোকানের ইফতার বিক্রেতাদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
বরিশাল শহরের ইফতার বিক্রেতা রাসেল। তার মতে, করোনা মহামারির সময়ও ইফতার ব্যবসায় এমনটা ক্রেতা সংকট দেখেননি তিনি, যেমনটা এবারে দেখছেন। যারা আসছেন তারা শুধুমাত্র জিলাপি ও বুরিন্দা কিনছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন ও দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে ইফতার বাজারের পণ্যের দাম বেড়েছে, আর সেই হিসাব কষলে বাসায় ইফতার তৈরিতে খরচ কম হচ্ছে। যেগুলো বাসায় বানানো সম্ভব হচ্ছে না, সেগুলো কিনতে দোকানে আসছেন ক্রেতারা।
খুলনার রেস্তোরাঁর মালিক মনিরুজ্জামান। তিনি মনে করেন, এবারে বাজারে সব পণ্যের দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে সয়াবিন, বেগুন, গরুর মাংসসহ রমজানে বেশি চলে এমন পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে। এ কারণে ইফতার সামগ্রীর দামও বেড়েছে। যে চপ গত বছর পাঁচ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেটা বাধ্য হয়ে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারদরের কারণে প্রস্তুতকৃত পণ্যের দাম বাড়ায় এবার ইফতার বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা নেই বলেই চলে।
আরিফুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, তেল ও কাঁচাপণ্যের দাম বাড়ায় ইফতার সামগ্রীর দামও বেড়েছে। সেই হিসাব কষলে বাড়িতে তৈরি ইফতার যেমন সাশ্রয়ী তেমনি স্বাস্থ্য সম্মত। তাই ইফতারের সবকিছু বাড়িতে তৈরি করা হচ্ছে। আর তিনি শুধুমাত্র বোরহানি কিনতে বাহিরে এসেছেন তিনি।
তার মতো আবুল বাশার নামে এক ক্রেতা শুধুমাত্র হালিম কিনতে দোকানে এসে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাই এবার পুরো রমজানের এক বারেই করে রেখেছেন তিনি। শুধুমাত্র মাঝেমধ্যে কাঁচাবাজারটা করছেন বলেও জানান তিনি।
একবারে ক্রয় করায় দামেও কিছুটা সাশ্রয়ী হচ্ছে উল্লেখ করে আবুল বাশার বলেন, ছোলা, পিঁয়াজু, ফুলকপি, আলুর চপ, বেগুনি সবই বাসায় তৈরি করছেন। আর বাচ্চারা বায়না ধরছে তাই হালিমটা কেনার জন্য বাহিরে এসেছি। পরে এটাও ঘরে তৈরি করা হবে।
বেড়েছে ইফতারের উপাদান বেগুন, শসা, লেবু, ধনেপাতা, পেঁয়াজ ও চিনির দাম
প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসের আগে নির্দিষ্ট কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বাড়বে—এটিই যেন নিয়ম। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। সারা দিন রোজা রাখার পর যাঁরা ইফতারে লেবুর শরবত পান করতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ আছে। রোজা শুরুর আগেই লেবুর দাম বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহ আগেও যে লেবু প্রতি হালি বিক্রি করা হতো ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে তা বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আরও রয়েছে বেগুন, শসা, ধনেপাতা, পেঁয়াজ ও চিনি। এর সবই মূলত ইফতারি তৈরির উপাদান। আর সাহ্রিতে যাঁরা মুরগির মাংস খেতে পছন্দ করেন, তাঁদেরও আগের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। এমনিতেই মাস দুয়েক ধরে বাজারে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে নতুন করে কিছু পণ্যের দাম আবার বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। এবার যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, তার মূল কারণ মাহে রমজানের আগে হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়া।
অবশ্য কয়েক দিন ধরে মন্ত্রীরা বলছেন, সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কারণে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নতুন করে আর বাড়বে না। যদিও বাজারে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের প্রতিফলন কম। অন্যদিকে টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) ভ্রাম্যমাণ ট্রাক থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে মানুষের ভিড় বাড়ছে।
প্রায় সব বাসাতেই রমজান মাসে ইফতারে বেগুনি থাকে। প্রতিবার রোজায় বেগুনের দাম বেড়ে যায়। ‘নিয়ম মেনে’ এবারও এই সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে এক কেজি লম্বা বেগুন বিক্রি হয়েছে মানভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগেও একই মানের বেগুন ওই বাজারেই বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে শসা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ধনেপাতার দাম বিক্রেতারা গতকাল নিয়েছেন ৭০ টাকা। আর কেজিতে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে দেশি পেঁয়াজ (প্রতি কেজি ৩৫ টাকা)।
পেঁয়াজের সরবরাহে ঘাটতি নেই তবুও চড়া
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজার ও মিরপুর ১১ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে বেগুন, শসা ও পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। রোজাকে কেন্দ্র করে ক্রেতারা এসব পণ্য বেশি পরিমাণে কিনছেন। এর প্রভাবে দাম বেড়েছে। আর লেবু ও ধনেপাতার সরবরাহ আগের চেয়ে একটু কমেছে। দাম বাড়ার কারণ, রোজার আগে এই দুই পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে।
উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী রোববার বা সোমবার পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। রোজার আগেই কিছু পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সরবরাহ কম-বেশি হওয়ার কারণে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়তে পারে। বাজার নিয়ন্ত্রণে দিনরাত কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
কিনলে কেনেন, না কিনলে নাই
রোজার জন্য কিছু পণ্য কিনতে গতকাল দুপুরে কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে যান অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আজাদ আহমেদ। তিনি থাকেন কৃষি মার্কেটের কাছেই মোহাম্মদপুর শেখেরটেক ১ নম্বর এলাকায়। তাঁর সঙ্গে কথা হয় বাজারে। তিনি বললেন, এক সপ্তাহ আগে এক কেজি শসা কিনেছিলেন ৭০ টাকায়। এখন দামই চাচ্ছে ১০০ টাকা। দরদাম করতে গেলেই বিক্রেতারা বলছেন, ‘কিনলে কেনেন, না কিনলে নাই। কিন্তু এর চেয়ে কম দামে বেচা যাবে না।’
সবজির পাশাপাশি খোলা চিনির দামও কেজিতে ৪ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হতো ৮০ টাকায়। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট বাজারের ‘মা মসলা’ দোকানের মালিক মোখলেসুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগে ১ বস্তা (৫০ কেজি) চিনি কিনেছিলেন ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। গতকাল একই বস্তা কিনেছেন ৩ হাজার ৬৮০ টাকায় (পাইকারি দর)।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সোনালিকা (কক) মুরগি ও গরু মাংসের দাম আরেক দফা বেড়েছে। গতকাল মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের একটি দোকানে সোনালিকা মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও এই বাজারে সোনালিকা ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর গরুর মাংসের দাম ছিল প্রতি কেজি ৬২০ টাকা। গতকাল ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের মাংস বিক্রেতা বাবুল আক্তার বলেন, রোজাকে কেন্দ্র করে হাটে প্রতিটি গরুর দাম আগের তুলনায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বেড়েছে। যে কারণে বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
কিছুটা স্বস্তির খবর হচ্ছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে এখনো সব দোকানে নতুন দরের ১ লিটার ও ২ লিটার তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। বেশির ভাগ দোকানে বিক্রি হচ্ছে শুধু ৫ লিটার তেলের বোতল। প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৬০ টাকা এবং ৫ লিটারের দাম ৭৬০ টাকা বেঁধে দিয়েছে সরকার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানির পরিবেশকদের কাছে ছোট বোতল (১ লিটার ও ২ লিটার) পাওয়া যাচ্ছে না।
১ লিটার ও ২ লিটারের যে তেলের বোতল দোকানে পাওয়া যাচ্ছে, সেসব বোতলের গায়ে আগের দাম লেখা রয়েছে। বিক্রিও হচ্ছে আগের দামে। ১ লিটারের দাম ১৬৮ টাকা, ২ লিটারের দাম ৩৩৫ টাকা। ফলে সীমিত আয়ের মানুষকে এখনো বেশি দাম দিয়েই (১ ও ২ লিটার বোতলের ক্ষেত্রে) তেল কিনতে হচ্ছে।
প্রতিবছর রোজার সময় নির্ধারিত কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম গতকাল রাতে মুঠোফোনে বলেন, রোজার সময় সরবরাহের বিপরীতে চাহিদা বেড়ে যাওয়াতেই মূল্যবৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে ভোক্তার অধিকার রক্ষায় যেসব আইন আছে, সেগুলো প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা দারিদ্র্যসীমার নিচে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাধ্যমে সরকার পণ্যের বরাদ্দ আরও বাড়াতে পারে। একই সঙ্গে সুষ্ঠু বিতরণব্যবস্থাও গড়ে তোলা প্রয়োজন। সরকারের বাজার মনিটরিং সেল ও ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা লাভের জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেই বাজারের ওপার চাপ ও চাহিদা কমবে, তখন দামও কমে আসবে।
তথ্য: সমকাল, প্রথম আলো, বাংলা নিউজ।
Discussion about this post