অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
চাঞ্চল্যকর মুনিয়া হত্যার ১ মাস পার হলেও এখন গ্রেফতার হয়নি মুনিয়া হত্যার প্রধান আসামী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। এমনকি সবকিছু প্রমাণ হওয়ার পরেও এখনো এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তও প্রকাশ করিনি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। শুধু তাই নয় এত বড়ো হত্যাকাণ্ডের পরে এখন প্রকাশে ঘুরেও বেড়াচ্ছেন খুনি আনভীর। অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও।
দেখা গেছে, গত কয়েকদিন আগে দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংগঠন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন সায়েম। এবং কথিত ভোটের মাধ্যমে সংগঠনের চেয়ারম্যান পদ হাতিয়ে নেন। তখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে গ্রেফতারের দাবি তুললে কোন পদক্ষেপ দেখা যায়। শুধু তাই নয় একজন খুনি প্রকাশ্যে নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দিলেও কোন গণমাধ্যম তার সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেনি। মুনিয়া হত্যার পরেও গণমাধ্যমের প্রশ্নবিদ্ধ ছিলো।
গণমাধ্যমের এমন ভূমিকার অনেকটাই সামনে নিয়ে আসলো বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)। গতকাল সন্ধ্যায় খুনি আনভীর সোবহানের বাসভবনে গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা। যদিও সাংবাদিকদের এমন আচারণ নতুন কিছু নয়। সাংবাদিকরা যে টাকার বিনিময়ে তাদের সতিত্ব বিক্রি করে সে সব বিষয় নিয়ে এর আগেও একাধিক প্রতিবেদন করেছে অ্যানালাইসিস বিডি। সবশেষে ‘দখলদার বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে যে এদেশের গণমাধ্যম মালিক টাকার বিনিময়ে তাদের সতিত্ব বিক্রি কর ‘ এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। সাংবাদিক মহলের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রতিবেদনটির সত্য প্রমাণ করলো।
প্রতিবেদেনে বলা হয়েছিলো, টাকার বিনিময়ে যারা নিজেদের সতিত্ব বিক্রি করে দেয় তারা আর স্বাধীন থাকে না। ক্রেতার ক্রয়কৃত পণ্যে পরিণত হয়ে যায। ক্রেতা তখন যেভাবে ইচ্ছে সেইভাবেই এই পণ্যকে ব্যবহার করতে পারে। বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে সাংবাদিকরা তেমনভাবে বিক্রি হয়ে গেছে। তারা এখন বসুন্ধরার গোলামে পরিণত হয়েছে। বসুন্ধরা যেভাবে চাচ্ছে সেই ভাবেই এখন ক্রয়কৃত সাংবাদিক নামের গোলামদেরকে ব্যবহার করছে।
দেখা গেছে, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ উঠার পরও গণমাধ্যমগুলো এনিয়ে কোনো প্রতিবেদন করেনি। বরং ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে গণমাধ্যম উল্টো মাঠে নামে। বসুন্ধরার এমডিকে বাদ দিয়ে তারা মুনিয়ার চরিত্র হননের জন্য ভুয়া প্রতিবেদন করতে থাকে। দেশের গণমাধ্যম আবারও মানুষ দালালমাধ্যম হিসেবে আখ্যা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে। প্রভাবশালী একজন খুনিকে রক্ষার জন্য যে গণমাধ্যমে উঠেপড়ে লাগতে পারে এটা মনে হয় মানুষের কল্পনার বাইরে ছিল। কিন্তু সেই কাজটাই করেছে কিছু দালাল খ্যাত সাংবাদিক।
এদিকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। তারা বলছেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কাজ হল সমাজের অপরাধ ও অপরাধীদেরকে খুঁজে বের করে মানুষের সামনে তুলে ধরা। কিন্তু বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের অধিকাংশই অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা এখন প্রতিবেদনের মাধ্যমে অপরাধ খুঁজে পাননা। তারা এখন টাকার বিনিময়ে অপরাধীদের রক্ষায় ব্যস্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের বর্তমান কমিটির নেতারা বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে আনভিরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এমনকি তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মুনিয়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে বসুন্ধরা এমডির বিরুদ্ধে আর কোনো প্রতিবেদন করবেনা।
Discussion about this post