অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভিরের প্রেমিকার হত্যাকাণ্ডর পর আবারো আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে এসেছে দেশের গণমাধ্যম। কিছু দিন আগে হেফাজতের বিক্ষোভ-হরতালের সময়ও আলোচনায় এসেছিল গণমাধ্যমের ভুমিকা। কিছু গণমাধ্যমের পক্ষপাতের কারণে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, খোদ গণমাধ্যমকর্মীরাই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। একটা দেশের গণমাধ্যম যে এভাবে মিথ্যাচার করতে পারে সেটা এর আগে কেউ দেখেনি।
এরপর গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্লাটে বসুন্ধরার এমপি সায়েম সোবহান আনভিরের প্রেমিকার রহস্যজনক মৃত্যুর পর আবারো মানুষের সামনে চলে আসলো গণমাধ্যমের নষ্টামির চিত্র। হেফাজতের সময় মানুষ গণমাধ্যমের সমালোচনা করলেও এবার শুধু সমালোচনা নয়, যে যেভাবে পারছে সেভাবেই অশালীন ভাষায় গালাগালি করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক ও সংবাদকর্মীদেরকে তুলনা করা হচ্ছে পশুর সাথে।
বসুন্ধরার এমডি আনভির ও তার প্রেমিকা মুনিয়ার কথোপকতন ও ডায়েরি থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে-আনভির তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এরপরও দুয়েকটি গণমাধ্যম ছাড়া অন্য সবগুলো গণমাধ্যম এই প্রতিবেদন করেনি। এছাড়া কয়েকটি গণমাধ্যম ঘটনা উঠে আসলেও বসুন্ধরা ও এমডি সায়েম সোবহানের নাম লিখেনি।
এমন হত্যাকাণ্ড নিয়ে গণমাধমের ভুমিকা দেখে মানুষ অবাক হয়ে গেছে। একটা দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম এ রকম কিভাবে হতে পারে যে, বড় শিল্পপতির ছেলে হত্যায় জড়িত থাকায় নিউজ করা যাবে না? একটা হত্যাকাণ্ডকে চাপা দেয়া কি গণমাধ্যমের কাজ? তারা কত টাকার বিনিময়ে এটা করেছে?
এরপর, দুইদিন পর দুইটি পত্রিকায় কথিত অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। দুইটি রিপোর্ট ছিল নিহত মুনিয়ার বিরুদ্ধে। দুইটি রিপোর্টেই মুনিয়ার চরিত্র হনন করা হয়েছে। পরবর্তীতে জানা গেছে, দুইটি পত্রিকায় নিহত মুনিয়ার বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে-সেটা সব পত্রিকার অফিসেই পাঠানো হয়েছিল। এমনকি অনেক সাংবাদিকের ফেসবুক মেসেঞ্জারেও এটা দেয়া হয়েছিল পত্রিকায় ছাপানোর জন্য।
জানা গেছে, এটা কোনো অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছিল না। বসুন্ধরা মিডিয়ার সাংবাদিকরা ঘরে বসে তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছে। যেসব মিডিয়া বসুন্ধরা এমডির বিরুদ্ধে নিউজ করেনি এবং তাদের তৈরি নিউজ যারা ছেপেছে তাদেরকে ৬০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। একাধিক মাধ্যমে জানা গেছে, এ ঘটনা চাপা দিতে বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু মিডিয়ার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
এখন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের নষ্টামি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। এগুলোকে এখন আর গণমাধ্যম বলা যায় না। এগুলো ‘সতীত্ব’ হারা গণমাধ্যম। টাকার বিনিময়ে এগুলো বসুন্ধরার কাছে সতীত্ব বিক্রি করে দিয়েছে।
Discussion about this post