অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সোমবার ছিল শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলটির অন্যান্য সহযোগী সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেছে। আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজনও করেছে আওয়ামী লীগ। তবে, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে শেখ হাসিনাকে নিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্য নিয়ে মানুষের মধ্যে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রশংসা করতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার অফুরন্ত প্রেরণা এবং সাহসের বর্ণিল ঠিকানা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জেগে আছেন বলেই নিশ্চিন্তে ঘুমায় বাংলাদেশ। কাদেরের ভাষায়-শেখ হাসিনা জেগে আছেন বলেই দেশের মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছে। মানে শেখ হাসিনা দিনরাত দেশের মানুষকে অতন্ত্র প্রহরীর মতো পাহারা দিচ্ছেন। আর মানুষ নাকে সরিষার তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে।
শেখ হাসিনার বিগত ১২ বছরের দু:শাসনের চিত্রটা সবার কাছেই পরিষ্কার। মনে হয় এখানে নতুন করে লেখার আর কোনো দরকার নাই। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের পর এখন দেশের সাধারণ মানুষও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন হাসিনার দু:শাসন যে কত যন্ত্রণার।
গত শুক্রবার থেকে রোববার। সময়ের ব্যবধান মাত্র তিন দিন। এই তিন দিনে দেশে বর্বরোচিত চারটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যেগুলো গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।
শুক্রবারে সিলেটের এমসি কলেজ হোস্টেলে হাসিনার সোনার ছেলেদের দ্বারা যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে এখন সারাদেশে তোলপাড় চলছে। একই দিন বান্দরবানে ঘরে ঢুকে এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে মানুষ নামের কিছু পশু। এটার বিচার দাবিতেও বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
পরের দিন শনিবার, ফেনী থেকে চট্টগ্রামে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীকে বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে কয়েক নরপশু। এঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর পরই আবার তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এরপর রোববার, আড়াই বছরের সন্তান সাথে নিয়ে স্বামীর খোঁজে মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ আসেন এক গৃহবধূ। এখানে আসার মানুষ নামের কিছু অমানুষ ওই গৃহবধূকে একটি ভবনে নিয়ে তার সন্তানকে একটি রুমে আটকে রেখে তাকে গণধর্ষণ করে।
এঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই সাভারের আরেক ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশিত হয়। এক তরুণী বিচার চাইতে গেলে আশুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন মাদবর ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে।
বিগত তিন দিনের মধ্যে সারাদেশে এমন আরও অনেক তরুণী-গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছে যেগুলো গণমাধ্যমে আসেনি।
তাহলে শেখ হাসিনা জেগে আছেন বলেই মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছে ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। বরং, অবস্থার আলোকে এটা বলা যায় যে, শেখ হাসিনা জেগে আছে বলেই এদেশের নারীরা নির্বিঘ্নে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এমন তার সোনার ছেলেদের দ্বারাই দেশে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
অনেকেই শেখ কামালের ধর্ষণের ইতিহাস নিয়ে এসে বলছেন, দেশ স্বাধীনের পর হাসিনার ভাই যে ধর্ষণের সূচনা করেছিলো আজও তার ধারাবাহিকতা চলছে। অনেকেই মন্ত্রী মোজাম্মেলকে সমালোচনা করছেন। তারা বলছেন সেদিন শেখ মুজিবের ছত্রছায়ায় ধর্ষণ করে আজ মন্ত্রী হয়েছেন। আজ হাসিনাও তার বাবার মত ধর্ষকদের পুষে আগামীর দেশ পরিচালনার জন্য তৈরী করছেন।