পাকিস্তানে বন্দী হওয়ার পর দেশে ফেরা ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করা এই ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ধরা পড়ার পর উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পাকিস্তানি সেনারাই তাঁকে রক্ষা করেছিলেন।
পাকিস্তানি বাহিনী গত বুধবার সকালে ভূপাতিত করে অভিনন্দনের মিগ–২১ যুদ্ধবিমানটি। এরপর আটক করা হয় তাঁকে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিওতে চোখ বাঁধা অভিনন্দনের মুখ বেয়ে রক্ত গড়াতে দেখা যায়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ উত্তেজনা চড়েছিল। ভারত অভিযোগ করে, পাকিস্তান জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করে যুদ্ধবন্দীকে নির্যাতন করেছে। অবশ্য পরে প্রকাশ করা অপর একটি ভিডিওতে অভিনন্দনকে চা–পান করতে দেখা যায়।
গতকাল নতুন প্রকাশিত ভিডিওতে অভিনন্দনকে ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় দেখা যায়। তিনি বলছিলেন, ‘আমি উইং কমান্ডার অভিনন্দন। আমি ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের একজন পাইলট। আমি যখন নিশানা খুঁজছিলাম, তখন তোমাদের (পাকিস্তান) বিমানবাহিনী গুলি করে আমাকে নিচে নামায়। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটি থেকে আমি বেরিয়ে আসতে সক্ষম হই। আমি বিমানটি থেকে ঝাঁপ দিই এবং আমার প্যারাস্যুট খুলি। যখন নিচে নামি তখন আমার কাছে একটি পিস্তল ছিল।’
অভিনন্দন বলেন, ‘সেখানে অনেক লোক ছিল। আমার বাঁচার একটিই উপায় ছিল, তা হলো পিস্তল ফেলে দৌড় দেওয়া। আমি সেটাই করি। কিন্তু লোকজন তখন আমার পিছু নেয়। তারা খুব বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। ঠিক তারপরই দুই পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা সেখানে হাজির হন এবং আমাকে রক্ষা করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই ক্যাপ্টেনরা আমাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচান। তাঁরা আমার কোনো ক্ষতি হতে দেননি। পরে তাঁরা তাঁদের ইউনিটে নিয়ে আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর সেখান থেকে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার স্বাস্থ্য পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে আরও চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী খুবই পেশাদার—এ মন্তব্য করে ভারতীয় পাইলট আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি, সেখানে শান্তি আছে। পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আমি সময় কাটিয়েছি এবং আমি খুব অভিভূত।’ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম সব সময় সত্যকে এদিক–সেদিক করে প্রকাশ করে। খুব সামান্য বিষয়কেও তারা এমন উসকানিমূলকভাবে উপস্থাপন করে যে মানুষ বিভ্রান্ত হয়।’
সূত্র: প্রথম আলো